শিরোনাম

ভারতের অর্থনীতি মৃত—ট্রাম্পের এই বক্তব্য খারিজ করে দিল তাঁর দেশের সব এআই

ভারতের অর্থনীতি মৃত—ট্রাম্পের এই বক্তব্য খারিজ করে দিল তাঁর দেশের সব এআই

সম্প্রতি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই মন্তব্য ঘিরে ভারতীয় রাজনীতিতে বিতর্কের ঝড় ওঠার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে ভারতীয় অর্থনীতি।

এই প্রেক্ষাপটে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ট্রাম্পের নিজ দেশের তৈরি পাঁচটি শীর্ষস্থানীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক (এআই) চ্যাটবটকে একটি সরল প্রশ্ন করে, ‘ইন্ডিয়ান অর্থনীতি কি মৃত?’ উল্লেখযোগ্যভাবে, সকল এআই চ্যাটবটই ট্রাম্পের দাবিকে সরাসরি অস্বীকার করেছে।

চ্যাটবটগুলোর সব উত্তর হলো—

চ্যাটজিপিটি: ‘ভারতের অর্থনীতি মৃত নয়। এটি গতিশীল এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী।’

গ্রোক: ‘না, ভারতীয় অর্থনীতি মৃত নয়। এটি বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতিগুলোর একটি।’

জেমিনি: ‘ভারতের অর্থনীতি শক্তিশালী বৃদ্ধির লক্ষণ দেখায়।’

মেটা এআই: ‘ভারতের অর্থনীতি মৃত নয়। এটি বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতিগুলোর একটি।’

কো পাইলট: ‘মৃত তো নয়ই, বরং পুরোপুরি বিপরীত পরিস্থিতি।’

বিশেষ করে মস্কোর সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে লক্ষ্য করে ট্রাম্প ভারতের প্রতি সমালোচনা বাড়িয়েছেন। ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা এবং রাশিয়ায় উৎপাদিত অপরিশোধিত খনিজ তেল এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার জন্য একটি অজ্ঞাত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান ট্রাম্প।

ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘ভারত রাশিয়ার সঙ্গে যা করুক, আমার কোনো সমস্যা নেই। তাদের মৃত অর্থনীতি একসঙ্গে রসাতলে যেতে পারে। আমরা ভারতের সঙ্গে খুব সামান্য ব্যবসা করেছি, তাদের শুল্ক সবচেয়ে বেশি।’

ভারতীয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পিয়ুষ গয়ল ট্রাম্পের দাবিকে অস্বীকার করে বলেছেন, ‘ভারত বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল প্রধান অর্থনীতি এবং কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার ব্যাপক প্রত্যাশা রয়েছে।’

তবে ট্রাম্পের এই বক্তব্যকে সমর্থন দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তিনি বললেন, ‘ট্রাম্প ঠিক বলেছেন। সবাই জানে এটা, শুধু প্রধানমন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রী ছাড়া। ভারতীয় অর্থনীতি মৃত অর্থনীতি।’

এতক্ষণে এই মন্তব্যে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন রাহুল গান্ধী। বিজেপির মুখপাত্র জৈবীর শেরগিল প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘রাহুল গান্ধী বলছেন, ‘‘ভারত মৃত অর্থনীতি’’। মনে হয় তিনি ভারতীয় অর্থনীতি পাকিস্তানের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন! অর্থনীতি জীবিত এবং শক্তিশালী।’

জৈবীর শেরগিল আরও বলেন, ‘ভারতের অবস্থান: বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি, দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন নির্মাতা, তৃতীয় বৃহত্তম অটোমোবাইল নির্মাতা, চতুর্থ শক্তিশালী শেয়ারবাজার। আগে যাচাই করো, তারপর কথা বলো।’

ট্রাম্পের এই ২৫ শতাংশ ট্যারিফ আরোপ এবং রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের তেলের ও প্রতিরক্ষা ক্রয়ের ‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থা’ ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যে নতুন উত্তেজনার আগুন জ্বালিয়েছে। তিনি ভারতের বাণিজ্য নীতিকে ‘সবচেয়ে কঠোর এবং বিরক্তিকর’ আখ্যা দিয়েছেন।

অন্যদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ভারতে রাশিয়ার ক্রুড তেল আমদানিতে ব্যাপক বেড়েছে। যুদ্ধের আগে রাশিয়ায় উৎপাদিত অপরিশোধিত খনিজ তেল ভারতের মোট তেল আমদানির মাত্র দশমিক ২ শতাংশ ছিল, যা এখন বেড়ে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশের মধ্যে দাঁড়িয়েছে এবং রাশিয়া এখন ভারতের প্রধান তেল সরবরাহকারী।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button