শিরোনাম
উচ্চকক্ষে পিআর, গোপন ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনজুলাই সনদ বাস্তবায়নে আইনি ভিত্তির দাবি এনসিপিরসরকার জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে গড়িমসি করলে বুঝতে হবে ‘কুচ কালা হ্যায়’: তাহেরসারা দেশে যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার ২৮৮বিচারপতি খায়রুল হকের বিরুদ্ধে রায় জালিয়াতির মামলায় আরও দুটি ধারা সংযোজনএ যেন কল্পকাহিনী—৩০ বছর ধরে হিমায়িত ভ্রূণ থেকে জন্ম নিল মার্কিন শিশুজুলাই সনদকে গেজেট নোটিফিকেশন করার নতুন প্রস্তাব বিএনপিরজাতীয় সনদের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শেষে ১৯ বিষয়ে ঐকমত্য: আলী রীয়াজবরিশালে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে কুপিয়ে হত্যাইসরায়েলি অবরোধে গাজার ২৭ বছরের যুবকের মৃত্যু, অনাহারে ওজন নেমেছিল ১৫ কেজিতে

সিরাজদিখানে ১৩ শিক্ষার্থীর স্কুলে ৫ শিক্ষক, তবু ফল বিপর্যয়

সিরাজদিখানে ১৩ শিক্ষার্থীর স্কুলে ৫ শিক্ষক, তবু ফল বিপর্যয়

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজদিয়া আব্দুল জব্বার পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ভকেশনাল (কারিগরি) শাখায় পাঁচজন শিক্ষক রয়েছেন। বর্তমানে নবম ও দশম শ্রেণি মিলিয়ে শিক্ষার্থী রয়েছেন মাত্রা ১৩ জন। তবু এসএসসি পরীক্ষায় ফল বিপর্যয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় ৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে মাত্র একজন। বাকি আট পরীক্ষার্থী ফেল করায় অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, একটি শ্রেণিকক্ষে এক শিক্ষক মাত্র সাতজন শিক্ষার্থী নিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। জানা গেল, তারা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অন্য একটি শ্রেণিকক্ষের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পাঁচজন শিক্ষার্থী রয়েছে। তারা নবম শ্রেণিতে পড়ছে।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিভাবক বলেন, ১৩ জন শিক্ষার্থীর জন্য পাঁচজন শিক্ষক থাকার পরও যদি এমন ফল হয়, তাহলে বুঝতে হবে পড়াশোনার পরিবেশ কেমন। শিক্ষকেরা সময়মতো ক্লাসে আসেন না। সব দোষ শুধু শিক্ষার্থীদের নয়। সরকার টাকা খরচ করছে, কিন্তু এর সুফল মিলছে না। তদারকি না থাকলে এসব ভকেশনাল শাখা একে একে বন্ধ হয়ে যাবে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালে পরীক্ষায় অংশ নেয় ৯ জন শিক্ষার্থী। তারা সবাই পাস করে। ২০২৪ সালে পরীক্ষার্থী ছিল চারজন। এর মধ্যে তিনজন উত্তীর্ণ হয়। ২০২৫ সালে ৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করে মাত্র একজন।

বিদ্যালয়ের ভকেশনাল শাখার জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ওবায়দুল্লাহ খান বলেন, ‘২০০১ সালে শাখাটি চালু হলে শুরুতে শিক্ষার্থী ছিল অন্তত ৩০ জন। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ জনে। এ বছর যারা ফেল করেছে, তারা একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে ফেল করেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই বিষয়ের শিক্ষক কয়েক মাস ধরে অসুস্থ থাকায় নিয়মিত ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি। এরই প্রভাব ফলাফলে পড়েছে।’

ওবায়দুল্লাহ খান আরও বলেন, ‘আমরা হতাশ হলেও হাল ছাড়ছি না। আগামী বছর ভালো ফল করতে বিশেষ কোচিং, ক্লাস মনিটরিং ও অভিভাবকদের সম্পৃক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম মাসউদুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থী কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ বাল্যবিবাহ। অনেক ছাত্রী নবম-দশম শ্রেণিতে ওঠার আগেই বিয়ে করে ফেলে। আবার অনেক পরিবার ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে পড়াতে চায়। যেহেতু আমাদের বিদ্যালয়টি শুধু মেয়েদের জন্য, তাই অনেকে মেয়েকে সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।’

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজদিয়া আব্দুল জব্বার পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ভকেশনাল (কারিগরি) শাখায় গতকাল মঙ্গলবার ক্লাস নিচ্ছেন এক শিক্ষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার রাজদিয়া আব্দুল জব্বার পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ভকেশনাল (কারিগরি) শাখায় গতকাল মঙ্গলবার ক্লাস নিচ্ছেন এক শিক্ষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাসউদুর রহমান আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থী বাড়াতে আমরা মাইকে প্রচার ও পোস্টারিং করছি। শিক্ষকেরা নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন কি না, সেটিও দেখা হচ্ছে। পাঠদানের মানোন্নয়নের জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

সিরাজদিখান উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. কামরুন নাহার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই ফলাফল অত্যন্ত হতাশাজনক। সম্প্রতি এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর আমরা বিদ্যালয়টির ভকেশনাল শাখা নিয়ে আলোচনা করেছি। দেখা গেছে, এটি শুরু থেকেই শিক্ষার্থীর সংকটে ভুগছে। এখন আমাদের লক্ষ্য শিক্ষার্থী বাড়ানো এবং মানোন্নয়ন নিশ্চিত করা।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button