ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ বিশ্বকে দেখিয়েছে, ইরানের ভিত্তি কতটা মজবুত: খামেনি


ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ বিশ্বকে দেখিয়েছে, ইরানের ভিত্তি কতটা মজবুত। তিনি এই যুদ্ধকে ইরানের সাহস ও শক্তির প্রমাণ হিসেবে দেখছেন। তাঁর মতে, এটি প্রমাণ করেছে যে ইরান কতটা শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। যুদ্ধবিরতির ৪০তম দিনে শহীদদের স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। খবর মেহের নিউজের।
খামেনি বলেন, ‘শত্রুরা আমাদের বিরোধিতা করে। কারণ, তারা ইরানের মানুষের ধর্ম, জ্ঞান ও ঐক্যকে ভয় পায়। কিন্তু আল্লাহর রহমতে, ইরানের মহৎ জাতি তাদের পথ থেকে কখনো সরে আসবে না।’ তিনি বিশ্বাস করেন, ইরানের জনগণ তাদের দেশকে বিশ্বের দরবারে উন্নতি ও সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে যেতে পারবে।
এই যুদ্ধে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, সেই সামরিক নেতা, বিজ্ঞানী এবং সাধারণ মানুষের পরিবারের প্রতি আবারও দুঃখ প্রকাশ করেন খামেনি। তিনি বলেন, ‘এই ১২ দিনের যুদ্ধে ইরান অনেক বড় সম্মান অর্জন করেছে, যা সারা বিশ্ব এখন মেনে নিচ্ছে। এর মাধ্যমে ইরান বিশ্বকে তার অদম্য শক্তি, ধৈর্য ও ইচ্ছাশক্তি দেখিয়েছে। সবাই এখন বুঝতে পারছে, বিশ্বমঞ্চে ইরানের শক্তি কতটা।’
খামেনি আরও বলেন, ‘দেশের সাধারণ মানুষ এবং প্রতিভাবান তরুণেরা নানা ক্ষেত্রে ইসরায়েলি শত্রুদের পিছু হটতে বাধ্য করেছে এবং ভবিষ্যতেও তারা এটা করে যাবে।’
আয়াতুল্লাহ খামেনি জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে বিশ্বের বড় শক্তিগুলো ইরানকে অপছন্দ করে। কারণ, তারা ‘ধর্ম, জ্ঞান এবং কোরআন ও ইসলামের ছায়াতলে ইরানিদের ঐক্যকে’ ভয় পায়। তিনি বলেন, ‘পরমাণু অস্ত্র, পারমাণবিক সমৃদ্ধি বা মানবাধিকারের কথা বলা আসলে তাদের অজুহাত। তাদের বিরোধিতার আসল কারণ হলো—বিজ্ঞান, মানববিদ্যা, প্রযুক্তি এবং ধর্মের মতো নানা ক্ষেত্রে ইরানের সর্বোচ্চ অবস্থান।’
প্রসঙ্গত, গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের ওপর হামলা শুরু করে। তারা ইরানের বেশ কিছু সামরিক নেতা ও বিজ্ঞানীকে হত্যা করে এবং আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়েও সাধারণ মানুষকে হত্যা করে। এতে এক হাজার জনেরও বেশি মানুষ মারা যান।
এরপর ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রও এই যুদ্ধে যোগ দেয়। দুই শক্তি একত্রে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক কেন্দ্রে বোমা হামলা চালায়। এরপর গত ২৪ জুন ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির দাবি করলে এই যুদ্ধ শেষ হয়।
তবে ইসরায়েলের হামলার সময় ইরান বসে ছিল না। তারা ইসরায়েলি ও মার্কিন হামলার জবাব দিয়েছে খুব শক্তভাবে। তারা ইসরায়েলের দখল করা এলাকায় হামলা চালিয়েছে এবং কাতারে থাকা একটি বড় মার্কিন বিমান ঘাঁটিতেও আঘাত হানে।