গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি বিএনপি নেতার, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ


পথসভায় এলাকা জ্বালিয়ে দেওয়ার বক্তব্যের জেরে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সহকারী অধ্যাপক গোলাম রসুল রাজাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী। সমাবেশ শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এলাকার নিরাপত্তা চেয়ে দরখাস্ত দেন তাঁরা।
আজ রোববার (২৭ জুলাই) দুপুরে নাগেশ্বরী উপজেলা শহরের ঈদগাহ মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সমাবেশ করে।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, ২৩ জুলাই উপজেলার বেরুবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির পথসভায় উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম রসুল রাজা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আজ আমি বলতে চাই, এই বেরুবাড়ীর মানুষকে ওই বোয়ালের ডারা দিয়ে কেরামতিয়া হাইস্কুল পর্যন্ত রাস্তায় অসম্মান করা হয়, আর যদি ওই জায়গায় বেরুবাড়ীর লোক অসম্মানিত হয়, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলতে চাই, ওই বানিয়াপাড়া-ভুষুটারীকে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে।’ এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বানিয়াপাড়া, ভুষুটারী এলাকার জনগণ ফুঁসে ওঠেন। পরে তাঁরা বিক্ষোভ করেন।
এদিকে শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের বক্তব্য ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান বিএনপির নেতা গোলাম রসুল।
আজকের সমাবেশে বক্তব্যে ওই এলাকার বাসিন্দা মোজাফর হোসেন মুকুল বলেন, ‘বানিয়াপাড়া, ভুষুটারী এলাকার মানুষ কর্মে বিশ্বাসী। এখানে চাকরিজীবী, শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ বাস করে। এখানকার অনেক মানুষ বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম রসুল রাজা আমাদের চাঁদাবাজ সাজিয়েছে। গুন্ডা বাহিনী সাজিয়েছে। আমাদের বাড়িঘর প্রকাশ্যে জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিচার দাবি করছি।’
সৈয়দ আলী তাঁর বক্তবে বলেন, ‘এ উপজেলার মানুষ অত্যন্ত শান্তপ্রকৃতির। শান্ত এলাকাকে অশান্ত করতে অপপ্রচার চালিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এর জন্য নাগেশ্বরী উপজেলায় কিছু ঘটলে তার দায়ভার রাজাকে বহন করতে হবে। গোলাম রসুল রাজা আমাদের পুরো এলাকার জনগণকে হুমকি দিয়েছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
এ প্রসঙ্গে নাগেশ্বরী উপজেলার বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম রসুল রাজা বলেন, ‘বানিয়াপাড়া ও বেরুবাড়ী ইউনিয়নের মধ্যে একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে বেরুবাড়ীর স্থানীয় বাসিন্দাকে অপদস্থ করে। এর প্রেক্ষাপটে এই বাক্যটি ব্যবহার করি। পরে আমি বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছি।’
কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেন, ‘বিষয়টি অবগত হয়েছি। তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে সাংগঠনিক বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’