জুলাই বিপ্লবে অপ্রতিরোধ্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়


২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় গণজাগরণ, যা শেষ হয় শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে। ৩৬ দিনের এই আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছিল অনন্য, যেখানে প্রতিদিন নিরবচ্ছিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের সূচনা হয় ৫ জুন, হাইকোর্টে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলসংক্রান্ত রায় ঘোষণার পর। ৬ জুন শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করেন জাবির শিক্ষার্থীরা। ঈদের বিরতির পর ১ জুলাই থেকে আবার সক্রিয় হয় আন্দোলন। আন্দোলনের কেন্দ্র হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনের প্রাঙ্গণ। সেখানেই গণতান্ত্রিক আলোচনার মাধ্যমে কর্মসূচি ও ব্যানার নির্ধারিত হতো। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামটির প্রস্তাবও আসে এখান থেকে।
১ জুলাই থেকে প্রতিদিন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে প্রতীকী অবরোধ চলে। ৪ জুলাই রায় শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে গেলে আন্দোলন তীব্র হয়। গঠিত হয় আহ্বায়ক কমিটি, যার নেতৃত্ব দেন আরিফ সোহেল ও মাহফুজ ইসলাম মেঘ।
৬ জুলাই থেকে বিভাগীয়ভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন শুরু হয়। ৭ জুলাই জাবি প্রথম ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করে।
১১ জুলাই পুলিশের বাধা অতিক্রম করে প্রথম ঢাকা-আরিচা সড়ক অবরোধ করেন জাবির শিক্ষার্থীরা, যার প্রভাব পড়ে সারা দেশে। ১৪ জুলাই শেখ হাসিনার বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিবাদে জাবির ক্যাম্পাসে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রলীগের হামলা ও হল সিসিটিভি না দেখানোর প্রতিবাদে হল প্রাধ্যক্ষ পদত্যাগ করেন।
১৫ জুলাইয়ের সহিংসতায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। উপাচার্যের বাসভবনে হামলার হুমকি থাকলেও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেননি উপাচার্য। রাত দেড়টার দিকে ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী হামলায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতাদের রুম ভাঙচুর ও ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগকে বিতাড়িত করা হয়; যা বাংলাদেশে প্রথম।
১৬ জুলাই সারা দেশ থেকে সাভারে শিক্ষার্থীদের ঢল নামে। ‘জাবি তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ স্লোগানে মুখর হয় ক্যাম্পাস। ১৭ জুলাই সিন্ডিকেট সভায় হল ফাঁকা ঘোষণা…