শিরোনাম

প্রবাসফেরত ভগ্নিপতিকে ‘পিটিয়ে হত্যা’, লাশ হাসপাতালে ফেলে পালালেন স্ত্রী

প্রবাসফেরত ভগ্নিপতিকে ‘পিটিয়ে হত্যা’, লাশ হাসপাতালে ফেলে পালালেন স্ত্রী

মাদারীপুরের রাজৈরে হালিম খান (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে হালিমকে রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করলে লাশ ফেলে স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে যান।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ইশিবপুর ইউনিয়নের নগর গোয়ালদি গ্রামের বালা উদ্দিনের ছেলে হালিম খান ইতালিতে ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ২০১৮ সালে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে পাশের দারাদিয়া গ্রামের ছোমেদ চৌকিদারের মেয়ে রেশমা আক্তারের। এরপর ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তাঁদের দুজনের বিয়ে হয়। এটি হালিমের দ্বিতীয় বিয়ে। তাঁর সঙ্গে প্রথম স্ত্রী জবেদা সুলতানার বিচ্ছেদ হয়েছে ২০১৮ সালে।

অভিযোগ উঠেছে, বিয়ের পর আবার ইতালি চলে যান হালিম। সেখানে গিয়ে স্ত্রী ও তাঁর শ্বশুরের নামে পর্যায়ক্রমে ৬০ লাখ টাকা পাঠান তিনি। সেই টাকা থেকে শ্যালক সবুজ চৌকিদার একটি মোটরসাইকেল কেনেন। তিন মাস আগে ছয় মাসের ছুটি নিয়ে দেশে আসেন হালিম। পরে মোটরসাইকেল কেনার টাকা ফেরত চান তিনি। এ ছাড়া বিদেশ থেকে পাঠানো টাকাও চান। এ নিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়।

গতকাল সোমবার রাতে বাড়ি থেকে হালিমকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেন শ্যালক সবুজ। পরে রাতেই হালিমকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিতে আজ মঙ্গলবার সকালে হালিমের লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান রেশমা ও তাঁর স্বজনেরা। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হালিম বেঁচে নেই। এর কিছুক্ষণ পরই কৌশলে হাসপাতালে লাশ ফেলে পালিয়ে যান রেশমাসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। খবর পেয়ে দুপুরে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

হালিমের প্রথম স্ত্রীর মেয়ে হিমু আক্তার বলেন, ‘আমার বাবাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমার বাবার মাথার পেছনে ও সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। আমি আমার বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। আমার বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী ও তাঁর পরিবারের লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছেন।’

নিহত হালিমের বড় ভাই মো. রাজ্জাক বলেন, ‘আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হালিম ইতালি থেকে ছুটিতে এসে খুন হবে—এটা কোনোভাবেই বুঝতে পারিনি। আমরা খুনিদের কঠিন বিচার চাই। আমার ভাইয়ের মাথায় ও শরীরে আঘাতের দাগ রয়েছে।’

রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাসুদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে খবর পেয়ে হালিমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জানতে পেরেছি, তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন হালিমকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় তাঁরা লাশ রেখেই পালিয়ে যান। ঘটনাটি সন্দেহজনক। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাঈমুল হাসান বলেন, ‘হালিমের বড় ভাই বাদী হয়ে চারজনের নামে রাজৈর থানায় মামলা করেছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button