গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করল ইরান, তেলের বাজারে উত্তেজনা


তেল আবিবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিয়েছে ইরান। দেশটির সশস্ত্র বাহিনী তাদের এক্স অ্যাকাউন্টে এক ঘোষণায় জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হরমুজ প্রণালী দিয়ে কোনো জাহাজ চলতে পারবে না!
এই বাহিনী বলেছে, ‘আমরা হজরত আল আব্বাস (আ.)-এর অনুসারী, আমাদের অনুমতি ছাড়া একটি মাছিও আমাদের জলসীমা অতিক্রম করতে পারবে না!’
অপরাপর পোস্টে আরও বলেছে, ‘তারা কোথায়, যারা বলেছিল তারা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র থামাবে এবং ইসরায়েলকে রক্ষা করবে? এখন বিশ্ব দেখতে পাবে কে আসল মধ্যপ্রাচ্যের সিংহ!’
এই ঘোষণায় স্পষ্ট হয়ে গেছে, ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ আরও জোরদার করবে এবং হরমুজ প্রণালীকে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করবে— যা বিশ্ব জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ জলপথ।
হরমুজ প্রণালী বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগতভাবে সংবেদনশীল একটি সমুদ্রপথ। এটি পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে এবং ইরান ও ওমানের মাঝখানে অবস্থিত। প্রণালীটির প্রস্থ খুব বেশি নয়—সবচেয়ে সংকীর্ণ জায়গায় মাত্র ৩৯ কিলোমিটার, যার মধ্যে কেবলমাত্র দুটি সংকীর্ণ চ্যানেল দিয়ে বড় জাহাজ চলাচল করতে পারে। তবে ছোট এই পানিপথ দিয়েই প্রতিদিন বিশ্বের মোট সমুদ্রপথে পরিবাহিত তেলের প্রায় ২০ শতাংশ যাতায়াত করে, যা একে বৈশ্বিক অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
হরমুজ প্রণালী দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। ইরান প্রায়ই এই প্রণালীকে একটি কৌশলগত চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা বা সামরিক হুমকির জবাবে ইরান একাধিকবার হুমকি দিয়েছে যে তারা হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে, যা গোটা বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থায় চরম বিপর্যয় ডেকে আনবে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা বারবার এই প্রণালীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের নৌবাহিনী মোতায়েন করেছে।
সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ প্রেক্ষাপটে ইরান জানিয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো জাহাজ এই প্রণালী দিয়ে চলাচল করতে পারবে না। এই ঘোষণায় আবারও বৈশ্বিক বাজারে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে তেল ও গ্যাসের দামে।