মেকআপের রঙে বরিশালের মুরাদের সাফল্যের আল্পনা


সৈয়দ তাজুল ইসলাম নয়ন।। বরিশালের মুরাদ মাহামুদ রাব্বি একসময় ছিলেন নৃত্যশিল্পী। কিন্তু পরিবারের আপত্তির কারণে নাচের ক্যারিয়ার দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তবে হার মানেননি তিনি। নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য শুরু করেন মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে নতুন পথচলা। আজ তিনি দেশের অন্যতম শীর্ষ মেকআপ শিল্পী।
২০০০ সালের ৫ নভেম্বর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন মুরাদ মাহামুদ রাব্বি। ছোটবেলা থেকেই তিনি সৃজনশীল কাজে আগ্রহী ছিলেন, বিশেষ করে নাচের প্রতি। ক্লাস ৯ থেকে নাচে সম্পৃক্ত হন, তবে পরিবারের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সমর্থন পাননি।
পরিবারের বাধার মুখে একসময় বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয় তাকে। বন্ধুবান্ধবদের সহায়তায় নতুন জীবন শুরু করেন। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে নিজের খরচ চালানোর জন্য নাচের পাশাপাশি মেকআপ শেখা শুরু করেন তিনি।
নৃত্যশিল্পীদের মেকআপ করতে করতে ধীরে ধীরে মেকআপের প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে মুরাদের। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের শীর্ষ মেকআপ শিল্পী যাহিদ খানের কাজ দেখে অনুপ্রাণিত হন। নিজের চাচাতো ভাইয়ের বিয়েতে প্রথমবার পেশাদারভাবে মেকআপ করেন। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি।
মেকআপের নতুন নতুন কৌশল শিখতে থাকেন এবং অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তার নিখুঁত মেকআপ কৌশল ও সৃজনশীল কাজ তাকে সেলিব্রিটিদের প্রিয় করে তোলে।
২০২৪ সালে নিজের ব্র্যান্ড ‘মুরাদ মেকআপ মিস্ট্রি’ চালু করেন মুরাদ মাহামুদ। এটি এখন দেশের অন্যতম আলোচিত মেকআপ ব্র্যান্ড। বিয়ের মেকআপ, ফ্যাশন শো, বিজ্ঞাপন, চলচ্চিত্রসহ নানা ক্ষেত্রে তার দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন তিনি।
মুরাদের হাতে সাজগোজ করেছেন অপু বিশ্বাস, পরীমনি, বিদ্যা সিনহা মিম, পূজা চেরি, দিঘি, ইমন, নিরব, শাকিব খানসহ দেশের অনেক জনপ্রিয় সেলিব্রিটি। এছাড়া, প্লাস পয়েন্ট, সালোর, এলআরএআইবি, হার্লিন, রোনেসন ও ইয়েলোর মতো ব্র্যান্ডের সঙ্গেও কাজ করেছেন তিনি।
নৃত্যশিল্পী থেকে মেকআপ আর্টিস্ট, সংগ্রাম থেকে সাফল্য—মুরাদ মাহামুদের জীবন এক অনুপ্রেরণার গল্প। বরিশালের এই তরুণ প্রমাণ করেছেন, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস থাকলে যেকোনো প্রতিকূলতাকে জয় করা সম্ভব।
বাংলাদেশের সৌন্দর্য জগতে নিজের আলাদা পরিচিতি গড়ে তুলেছেন মুরাদ মাহামুদ, যা ভবিষ্যতে তাকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।