যুক্তরাষ্ট্রকে ‘অর্ধেক শুল্ক ফেরত দিতে হবে’, কিন্তু কেন ও কখন


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট যদি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আরোপিত ‘পাল্টাপাল্টি শুল্ক’ বাতিল করেন, তাহলে মার্কিন সরকারকে ‘রিবেট’ বা ফেরত দিতে হবে। ওয়াশিংটন যেসব দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে, তা নিয়ে মার্কিন আপিল আদালত যে রায় দিয়েছেন—তার পরপরই এই মন্তব্য করলেন বেসেন্ট।
গতকাল রোববার এনবিসি নিউজের মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘আমাদের প্রায় অর্ধেক শুল্ক ফেরত দিতে হবে, যা ট্রেজারির জন্য ভয়াবহ হবে…তবে যদি কোর্ট বলেন, আমাদের সেটা করতেই হবে।’ তবে বিস্তারিত কিছু না জানালেও মার্কিন অর্থমন্ত্রী জানান, শুল্ক আরোপের আরও ‘বিভিন্ন পথ’ রয়েছে, তবে এগুলো ট্রাম্পের আলোচনার অবস্থানকে ‘দুর্বল করে দেবে’।
এর আগে, সিবিএস নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের পরিচালক কেভিন হাসেট বলেন, সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্প প্রশাসনের বিপক্ষে রায় দিলেও শুল্ক আরোপের ‘অন্যান্য আইনগত কর্তৃত্ব’ আছে। তাঁর মতে, ‘সেকশন ২৩২’ তদন্ত—যা স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক আরোপে ব্যবহার করা হয়েছিল—সেগুলোও সম্ভাব্য বিকল্প হতে পারে।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আহ্বান জানান, নিম্ন আদালতের রায় দ্রুত বাতিলের জন্য। এর আগে, গত ২৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আপিল আদালতের ফেডারেল সার্কিট ৭–৪ ভোটে রায় দেন যে ট্রাম্প জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের আওতায় শুল্ক আরোপ করেন, তাঁর জন্য নির্ধারিত ক্ষমতার সীমা ছাড়িয়ে গেছেন। আদালতের ভাষ্য অনুযায়ী, শুল্ক আরোপ করা মূলত কংগ্রেসের একান্ত ক্ষমতা।
এরও আগে, মে মাসে নিউইয়র্কভিত্তিক কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড শুল্কগুলোকে বেআইনি ঘোষণা করেছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদালতে দাখিল করা নথিতে বলা হয়, ‘রায় ঘোষণায় ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত দেরি হলে তত দিনে ৭৫০ বিলিয়ন থেকে এক ট্রিলিয়ন ডলারের শুল্ক আদায় হয়ে যাবে, যা ফেরত দিতে হলে ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেবে।’ গত বুধবার রাতে দাখিল করা নথিতে সলিসিটার জেনারেল জন সাওয়ার বলেন, ‘এই মামলার গুরুত্ব অপরিসীম।’
মার্কিন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত শুল্ক বাবদ ২১০ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে, যা মার্কিন আদালত বেআইনি বলে রায় দিয়েছেন। যদি সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে, তাহলে অর্থ মন্ত্রণালয়কে শুল্ক বাবদ আদায়কৃত অর্থ ফেরত দিতে হতে পারে।
ট্রাম্প আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের আওতায় গত এপ্রিলে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। তিনি দাবি করেন, বাণিজ্য ঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে এবং এটি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। এরপরই তিনি বৈদেশিক অংশীদারদের ওপর বড় অঙ্কের শুল্ক আরোপ করেন। তবে আপিল আদালত তাঁর রায়ের কার্যকারিতা ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেছেন, যাতে ট্রাম্পের সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার সুযোগ থাকে।
ক্রাইম জোন ২৪