আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক: জামায়াত নেতা


চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের পর জামায়াতে ইসলামীর এক নেতার বিতর্কিত মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। একটি ভিডিওতে ওই নেতাকে বলতে শোনা যায়, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক। আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা আমরা মেনে নেব না।’ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম এমন মন্তব্য করেন।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা গোলচত্বর, এ এফ রহমান হল ও শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
ওই সভায় জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বুকের ওপর। আমরা এই জায়গার মালিক, তাই অন্যায় কিছু মেনে নেব না। আমাদের সম্মান করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় যদি আমাদের যথাযথ সম্মান না করে, তবে আমরা জনগণ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
জোবরা গ্রামে আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভায় উপস্থিতি ছিলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অফিস সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খালেদ। সেখানে হাবিবুল্লাহ খালেদ বলেন, ভুল–বোঝাবুঝিকে কেন্দ্র করে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। প্রকৃত সন্ত্রাসীরা এই এলাকার নয়, বাইরে থেকে এসেছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তবে তার এ ধরণের বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের রক্তের সাথে বেইমানি বলছেন বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা।
জামায়াত নেতার বক্তব্য প্রত্যাখান ও শিবির নেতার বক্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ শিবিরের:
বিবৃতিতে বলা হয়, হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও দলীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সিরাজুল ইসলাম জোবরা এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অহংকারী ভাষায় ও শিক্ষার্থীদের জন্য অপমানজনক যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা প্রকৃত সন্ত্রাসীদের অপকর্মকে আড়াল করে দেয়। তাঁর বক্তব্য স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দায়মুক্তি দেওয়ার নামান্তর। এছাড়া খালেদের বক্তব্যে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের অপরাধকে লঘু করে কেবল বহিরাগত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের অপকর্ম ফুটে উঠেছে, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।
শিবিরের বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, হামলায় ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা সরাসরি অংশ নিয়েছেন। একজন বিএনপি নেতাকে হামলার নির্দেশদাতা হিসেবে বহিষ্কার করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি বা তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। অস্ত্র হাতে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা ছাত্রদলের ক্যাডার হওয়া সত্ত্বেও তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি।
সবশেষে, সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সঠিক বিচার দাবি করেছে।
ক্রাইম জোন ২৪