শিরোনাম
রাজনীতিতে আসার আগে যৌনকর্মী ছিলেন—ফিনিশ এমপির খোলামেলা স্বীকারোক্তিজনগণের বিশ্বাস থেকেও বিতাড়িত হয়েছে আ.লীগর‍্যাবের ধাওয়ায় পানিতে ডুবে মাদক কারবারির মৃত্যুবাঁকখালী নদীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা দেওয়ায় আরও এক মামলায় আসামি ১০০০শিক্ষাবহির্ভূত কাজে শিক্ষকদের না রাখার চেষ্টা করা হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টাপ্রাথমিকে ছুটি কমিয়ে আনা হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টারাবিতে শিবিরের প্যানেল থেকে নির্বাচন করবেন জুলাইয়ে চোখ হারানো দ্বীপ মাহবুবমনোনয়নপত্র দাখিল সমাপ্ত, রাকসুর ২৩ পদের বিপরীতে ২৫৯ প্রার্থীমোহাম্মদপুরের বছিলায় দিনের বেলায় চাপাতি হাতে ছিনতাই, গ্রেপ্তার ১ধর্ষণের শিকার বিধবা, ছদ্মবেশে আসামি ধরলেন কনস্টেবল

ভারত-পাকিস্তানের মাঝে আটকে ‘রাষ্ট্রহীন’ দুই বোন

ভারত-পাকিস্তানের মাঝে আটকে ‘রাষ্ট্রহীন’ দুই বোন

ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকত্ব জটিলতার ফাঁদে পড়ে এক পরিবার বছরের পর বছর ধরে মানবিক সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। কেরালায় বসবাসরত এই পরিবারের দুই বোন বর্তমানে রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন। কারণ পাকিস্তানি নাগরিকত্ব ত্যাগের প্রমাণপত্র তাদের হাতে নেই। ফলে ভারতীয় নাগরিকত্বও তাঁরা পাচ্ছেন না।

বিবিসি জানিয়েছে, ২০০৮ সালে মা রশিদা বানু ও চার সন্তানকে নিয়ে ভারতে ফিরে এসেছিলেন পাকিস্তানপ্রবাসী মোহাম্মদ মারুফের পরিবার। তবে ভারতীয় সমাজে খাপ খাওয়াতে না পেরে মারুফ আবার পাকিস্তানে ফিরে যান। এদিকে রশিদা বানু ও তাঁর বড় ছেলে ভারতের নাগরিকত্ব পেলেও ছোট দুই মেয়ে আইনগত জটিলতায় পড়ে যান।

২০১৭ সালে তাঁরা দিল্লির পাকিস্তান হাইকমিশনে পাসপোর্ট জমা দিয়ে নাগরিকত্ব ত্যাগের আবেদন করেন। কিন্তু তখন বয়স ২১ বছরের নিচে হওয়ায় পাকিস্তানের নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। পরে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও হাইকমিশন তাদের ‘রেনানসিয়েশন সার্টিফিকেট’ দেয়নি। এর বদলে শুধু একটি সনদ দিয়েছে, যেখানে উল্লেখ আছে—ভারতীয় সরকার চাইলে তাঁদের নাগরিকত্ব দিতে পারে। কিন্তু ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই সনদ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়।

এ অবস্থায় আদালতে আশ্রয় নেন ওই দুই বোন। গত বছর কেরালা হাইকোর্টের একক বেঞ্চ তাঁদের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু চলতি বছরের ২৩ আগস্ট একই আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ রায় উল্টে দেন। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ‘ভারতের নাগরিকত্ব শুধু ভারতীয় রাষ্ট্রই স্বীকৃতি দেবে, অন্য কোনো দেশের দাবি থাকলে আইনগত অস্পষ্টতা থেকে যাবে।’

এই রায়ের ফলে দুই বোন আবারও আইনি অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছেন। তাঁদের আইনজীবী বলেছেন, ‘তারা নাবালক থাকায় ২০১৭ সালে সনদ পাননি। এখন প্রাপ্তবয়স্ক হলেও পাসপোর্ট ফেরত না থাকায় পাকিস্তানও তাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে না। ফলে তারা পুরোপুরি আটকে গেছেন।’

রাষ্ট্রহীনতার কারণে তাঁদের জীবনে নেমে এসেছে ভয়াবহ সংকট। পাসপোর্ট না থাকায় এক বোনের স্বামীকে উপসাগরীয় একটি দেশ থেকে ফিরে আসতে হয়েছে, আরেক বোনের সন্তানকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মোবাইল সংযোগ কিংবা সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করার মতো সাধারণ কাজেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের বৈরিতা ও কড়াকড়ি কাগজপত্র যাচাই প্রক্রিয়া এই পরিবারকে এমন এক অবস্থায় ফেলেছে, যেখানে তাঁদের কোনো দেশেরই পূর্ণ নাগরিকত্ব নেই। আদালতের সর্বশেষ রায়ের পর আপিলের সুযোগ থাকলেও, কবে এই সংকটের সমাধান হবে তা কেউ বলতে পারছে না।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button