দেশজুড়ে তীব্র বিক্ষোভের মুখে চীন সফর বাতিল করলেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট


ইন্দোনেশিয়ায় সহিংস বিক্ষোভের মধ্যে চীন সফর বাতিল করেছেন প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ানতো। শনিবার (৩০ আগস্ট) তিনি জানান, চলমান পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ ও সমাধানের পথ খুঁজতে তিনি দেশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রোববার সিএনএন জানিয়েছে, ৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ অবসানের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চীনে আয়োজিত ‘ভিক্টরি ডে’ প্যারেডে যোগ দেওয়ার কথা ছিল প্রাবোওর। তবে প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র প্রসেতিও হাদি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার পরিস্থিতি সরাসরি মনিটর করতে চান প্রেসিডেন্ট এবং সেরা সমাধান খুঁজে বের করতে চান। এ জন্য তিনি চীন সরকারের কাছে না যাওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।’
সেপ্টেম্বর মাসেই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যোগদানের বিষয়টিও প্রেসিডেন্টের চীন সফর বাতিলের আরেকটি কারণ বলে উল্লেখ করেন মুখপাত্র।
এদিকে বিক্ষোভের উত্তাপে জনপ্রিয় শর্ট ভিডিও অ্যাপ টিকটক ইন্দোনেশিয়ায় তাদের লাইভ ফিচার সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। চীনা মালিকানাধীন এই প্ল্যাটফর্ম জানিয়েছে, কয়েক দিনের জন্য এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। এর আগে মেটা ও টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কনটেন্টে নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার সরকার। সরকারের দাবি, অনলাইনে ছড়ানো ভুয়া তথ্য বিক্ষোভকে উসকে দিয়েছে।
জানা যায়, প্রথমে সংসদ সদস্যদের ভাতা বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাকার্তায় আন্দোলন শুরু হলে, পরে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়—শনিবার পশ্চিম নুসা তেনগারা, মধ্য জাভার পেকালংগান ও পশ্চিম জাভার সিরেবনে আঞ্চলিক সংসদ ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। সিরেবনে সংসদ ভবনের আসবাবপত্র লুট করারও অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার দক্ষিণ সুলাওয়েসির রাজধানী মাকাসারে অবস্থিত আঞ্চলিক সংসদ ভবনে অগ্নিসংযোগে তিনজন নিহত হয়েছেন। সরকারি সংবাদ সংস্থা আনতারার খবরে বলা হয়, নিহতরা ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। এই ঘটনায় আরও অন্তত দুজন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে বালিতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ সেখানে টিয়ার গ্যাস ছুড়ে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো আরও জানিয়েছে, জাকার্তায় নাসডেম দলের সংসদ সদস্য আহমাদ সাহরোনির বাড়িতেও হামলা চালিয়ে আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন জিনিস লুট করা হয়েছে। সাহরোনি সম্প্রতি মন্তব্য করেছিলেন—‘সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানানোরা বিশ্বের সবচেয়ে বোকা মানুষ।’
ক্রাইম জোন ২৪