ব্যবসা-বাণিজ্যে যেভাবে উৎসাহ দিয়েছেন নবীজি


ব্যবসা-বাণিজ্যে যেভাবে উৎসাহ দিয়েছেন নবীজি
তাসনিফ আবীদ
প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ০৭: ৪৭
প্রতীকী ছবি
নবুয়ত লাভের আগে আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) একজন অত্যন্ত সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। পূর্বপুরুষের ধারা অনুসরণ করে তিনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন এবং বাহরাইনসহ আরবের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করেছেন। তাঁর সততা, বিশ্বস্ততা ও অনন্য দক্ষতার কারণে তিনি অল্প সময়েই মক্কার এক সফল ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। মক্কার ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হজরত খাদিজা (রা.)-এর ব্যবসাও তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করেছিলেন, যা তাঁর ব্যবসায়িক প্রজ্ঞার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
নবুয়তের দায়িত্ব কাঁধে আসার পর দাওয়াতের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেও তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে দূরে সরে যাননি, বরং তাঁর সাহাবিদের সর্বদা সৎভাবে ব্যবসা করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি বলতেন, ‘জীবিকার ১০ ভাগের ৯ ভাগই ব্যবসা-বাণিজ্যের মধ্যে এবং বাকি এক ভাগ গবাদিপশুর কাজে নিহিত।’ (আল-জামিউস সাগির)। এই উক্তি শুধু জীবিকার উৎস হিসেবে ব্যবসার গুরুত্বই প্রকাশ করে না, বরং সৎ উপায়ে অর্থ উপার্জনের প্রতি ইসলামের গভীর দৃষ্টিভঙ্গিরও ইঙ্গিত দেয়।
তবে মহানবী (সা.) সব সময় ব্যবসার মূল ভিত্তি হিসেবে সততা ও নৈতিকতার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করতেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, ‘কিয়ামতের দিন সৎ ব্যবসায়ীরা সিদ্দিক (সত্যবাদী) ও শহীদদের সঙ্গে উত্থিত হবেন।’ (ইবনে মাজাহ)। এটি এক অসাধারণ সম্মান, যা একজন সৎ ব্যবসায়ীকে আল্লাহ তাআলা দান করবেন। হজরত রাফে ইবনে খাদিজা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে যখন সর্বোত্তম উপার্জন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তখন তিনি বলেন, ‘ব্যক্তির নিজস্ব শ্রমলব্ধ উপার্জন ও সততার সঙ্গে বেচাকেনা।’ (মুসনাদে আহমাদ)।
এই হাদিসগুলো থেকে বোঝা যায়, ইসলাম ব্যবসা-বাণিজ্যকে শুধু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড হিসেবে দেখে না, বরং আল্লাহর ইবাদত হিসেবে গণ্য করে, যেখানে সততা ও নৈতিকতার মানদণ্ড বজায় রাখা অপরিহার্য। মহানবী (সা.)-এর জীবন ও শিক্ষা থেকে আমরা এই মৌলিক নীতিটিই পাই, যা সব ব্যবসায়ীর জন্য এক অনুসরণীয় আদর্শ।
ক্রাইম জোন ২৪