গণপিটুনিতে জামাই-শ্বশুর হত্যায় দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ


রংপুরের তারাগঞ্জে চুরির অপবাদে গণপিটুনিতে নিহত রূপলাল রবিদাস ও প্রদীপলাল রবিদাসকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে। আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ দলিত পরিষদের আয়োজনে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে নিহতদের স্বজনেরা বলেন, ‘রূপলাল ও প্রদীপকে প্রকাশ্যে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। দ্রুত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। হত্যাকারীদের ভিডিওতে দেখা গেলেও পুলিশ তাদের ধরতে সময় বিলম্ব করায় তারা পালিয়েছে।’
শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগ বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু ও দলিত সম্প্রদায়ের মানুষের হামলা ও নির্যাতন শিকার এবং মিথ্যা অপবাদে গণপিটুনিতে প্রাণ হারাচ্ছে। সরকারকে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং দলিতদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।’ মানববন্ধনে বাংলাদেশ দলিত পরিষদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ছাড়াও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধন অংশ নিয়ে নিহত প্রদীপলালের মেয়ে পলাশী রানী বলেন, ‘আমার বাবা যদি সন্ত্রাসী হতো, তাহলে তারা পুলিশের হাতে কেন দিল না? বাবার সঙ্গে আইডি কার্ড সব সময় থাকত। তারা তো জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারত। কেন তারা আমার বাবাকে হত্যা করল? এখন আমাদের কী হবে? আমার বাবা, দাদাকে যারা হত্যা করেছে, আমরা তাদের ফাঁসি চাই।’
প্রদীপলালের ছেলে আপন দাস বলেন, ‘আমার বাবা প্রতিবন্ধী। নিজে চলতে পারে না। আমার বাবার একটাই ভ্যান। সেই ভ্যান নিয়ে দাদুর বাসায় গেছিল। সে কীভাবে চুরি করবে? হত্যার অপবাদ দিয়ে হত্যাকারীদের আমরা সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।’
নিহত রূপলাল ও প্রদীপলালের পরিবার জানায়, তাঁরা কখনো চুরি বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। শুধু অপবাদ দিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। দ্রুত বিচার নিশ্চিত না হলে দলিত সম্প্রদায়ের ওপর এ রকম হামলা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে তারা।
ক্রাইম জোন ২৪