যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখামাত্র পুতিনকে গ্রেপ্তারের আহ্বান


রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একটি ‘ঐতিহাসিক’ বৈঠকে যোগ দিতে আলাস্কার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিমানে ওঠার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি এই বৈঠককে ‘উচ্চ ঝুঁকি’ বলে মন্তব্য করেছেন। এরপর এয়ার ফোর্স ওয়ানে ট্রাম্প সাংবাদিকদের জানান, তিনি ইউক্রেনের হয়ে মধ্যস্থতা করতে যাচ্ছেন না, বরং তাঁর লক্ষ্য হলো পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনা। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে ইউক্রেনের জন্য সমঝোতা করতে আসিনি।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘পুতিন বিশ্বাস করেন, তাঁর ধারাবাহিক হামলা তাঁকে আলোচনায় শক্তি দেবে, কিন্তু আমি মনে করি এতে তাঁর ক্ষতিই হবে। আমি মনে করি, পুতিনের সঙ্গে এই শীর্ষ বৈঠকে আমরা কিছু ফলাফল অর্জন করব। মানুষের জীবন বাঁচাতে আমি যুদ্ধ বন্দের করার চেষ্টা করছি। যদি রাশিয়া একটি চুক্তিতে না আসে, তবে তারা কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হবে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘ভূমি বিনিময়ের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব ইউক্রেনের।’
এদিকে, ট্রাম্প আলাস্কায় রওনা হওয়ার সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এক পোস্টে বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের উচিত রাশিয়াকে ‘যুদ্ধ’ বন্ধে রাজি করানো। তিনি বলেন, ‘যুদ্ধ শেষ করার এটাই সময়, এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অবশ্যই রাশিয়াকে নিতে হবে। আমরা আমেরিকার ওপর ভরসা করছি।’
আলাস্কার দূরবর্তী অ্যাঙ্কোরেজ শহরে ট্রাম্প-পুতিনের এই বৈঠক ইউক্রেনের ভবিষ্যতের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধ শুরুর পর এটিই হবে পুতিনের প্রথম পশ্চিমা দেশ সফর।
ট্রাম্পের প্রতিনিধিদলে রয়েছেন সেক্রেটারি অব স্টেট মার্কো রুবিও, ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট, কমার্স সেক্রেটারি হাওয়ার্ড লুটনিক এবং সিআইএ (CIA) পরিচালক জন র্যাটক্লিফ সহ আরও অনেকে।
এই আলোচনা এলমেন্ডর্ফ এয়ার ফোর্স বেসে স্থানীয় সময় শুক্রবার ১১টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ১ টা ৩০) শুরু হবে। এই ঘাঁটিটি আলাস্কার সবচেয়ে বড় সামরিক স্থাপনা এবং স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর নজরদারির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। এই বৈঠকের ঐতিহাসিক তাৎপর্য আরও গভীর। কারণ যুক্তরাষ্ট্র ১৮৬৭ সালে রাশিয়ার কাছ থেকে আলাস্কা কিনেছিল—যে চুক্তিকে মস্কো প্রায়শই ভূমি বিনিময়ের বৈধতা বোঝাতে ব্যবহার করে।
ট্রাম্প এই শীর্ষ বৈঠককে পুতিনকে ‘পরীক্ষা’ করার একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেছেন, যে কোনো চূড়ান্ত চুক্তি হলে সেটি পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর উপস্থিতিতে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে।
ক্রাইম জোন ২৪