শিরোনাম

বরিশাল-৩ আসনে বিএনপির দুই হেভিওয়েট নেতার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

বরিশাল-৩ আসনে বিএনপির দুই হেভিওয়েট নেতার দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে

বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনে বিএনপির দুই প্রভাবশালী নেতা—স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন—দীর্ঘদিন ধরে প্রতিদ্বন্দ্বী। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দুজনই সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। আগামীকাল শনিবার অনেক দিন পর তাঁরা দুজন বাবুগঞ্জে আসছেন। একই সময়ে পৃথক দুটি কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে নানা আলোচনার ঝড় বইছে।

জানা গেছে, আগামীকাল বেলা ৩টায় উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নে ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকবেন সেলিমা রহমান। যদিও স্থানীয় বিএনপির দাবি, তাঁদের এ বিষয়ে জানানো হয়নি। অন্যদিকে একই সময়ে উপজেলা অডিটোরিয়ামে বাবুগঞ্জ উপজেলা ও ইউনিয়ন শাখা বিএনপির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।

আগরপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল মালেক শিকদার বলেন, ‘সেলিমা আপা আগরপুরে গণসংযোগে আসছেন, তবে বিষয়টি আমাদের জানানো হয়নি। একই সময়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন সাহেবের কর্মিসভা আছে, সেখানে দলের নেতারা থাকবেন।’

বর্তমানে বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কমিটিতে জয়নুল আবেদীনের অনুসারীদের প্রাধান্য রয়েছে। ফলে ইউনিয়ন কমিটিগুলোও তাঁর নিয়ন্ত্রণে। তবে বাবুগঞ্জে বিএনপির একটি বড় অংশের কর্মী-সমর্থক সেলিমা রহমানের পক্ষে কাজ করছেন। এ ছাড়া বাবুগঞ্জের দেহেরগতি ইউনিয়নের সন্তান হিসেবে সেলিমা রহমানের বেশ প্রভাব রয়েছে। দুই নেতার দীর্ঘদিন পর বাবুগঞ্জে আগমনে বিএনপিতে বিভক্তি প্রকাশ্যে এসেছে।

সেলিমা অনুসারী ও বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ইশরাত হোসেন কচি বলেন, ‘সেলিমা রহমান বেলা ৩টায় আগরপুর ইউনিয়নের কর্মিসভায় অংশ নেবেন। জয়নুল ভাইয়ের কর্মসূচি আর সেলিমা আপার কর্মসূচির দূরত্ব অনেক। মনোনয়ন পেলে সেলিমা রহমান অবশ্যই আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।’ কচি আরও দাবি করেন, নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না করে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব ২৫ নভেম্বরের পর গঠিত বাবুগঞ্জের পাঁচটি বিতর্কিত ও বিলুপ্ত কমিটি পুনর্বহালের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

এ ব্যাপারে জয়নুল অনুসারী ও বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব অহিদুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, ‘সেলিমা আপার উচিত ছিল আমাদের জানিয়ে কর্মসূচি করা। তিনি এর আগে বলেছিলেন নির্বাচন করবেন না, এখন মনে হয় ইচ্ছা আছে।’ বাবুগঞ্জে একই দিনে দুই নেতার কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নেতা-কর্মীর মধ্যে তো আলোচনা আছেই। একসঙ্গে দুজনে এলে ভালো হতো। সেলিমা আপা এভাবে দলীয় নেতাদের না জানিয়ে কর্মসূচি করায় বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে।’ প্রিন্স আশা করেন, এই কর্মী সম্মেলনে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিতি থাকবেন।

এ বিষয়ে জানতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনকে ফোন করা হলেও তাঁরা রিসিভ করেননি।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। এর আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন সেলিমা রহমান। সেবার ওই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন জয়নুল আবেদীন।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button