সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ ও বিচার বিভাগীয় সচিবালয় নিয়ে রায় ২ সেপ্টেম্বর


অধস্তন আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি শেষ হয়েছে। এই বিষয়ে আগামী ২ সেপ্টেম্বর রায় দিবেন হাইকোর্ট।
আজ বুধবার শুনানি শেষে বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত বছরের ২৫ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের সাত আইনজীবী রিটটি করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে ২৭ অক্টোবর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং ২০১৭ সালের জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া বিচার বিভাগীয় পৃথক সচিবালয় কেন প্রতিষ্ঠা করা হবে না, তাও জানতে চান আদালত।
চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে রুল শুনানি শুরু হয়। তবে গত ২৪ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুবকে আপিল বিভাগে নিয়োগ করে সরকার। এরপর এই সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তির জন্য বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। পুনর্গঠিত বেঞ্চে চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল রুল শুনানি শুরু হয়।
রিট আবেদনকারীদের পক্ষে মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন ও জায়েদ বিন আমজাদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদি হাসান। এছাড়া অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শরীফ ভূইয়া এবং ইন্টারভেনর (ব্যাখ্যাদান কারী) হিসেবে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।
আদালত থেকে বের হয়ে মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, নিম্ন আদালত যদি পুরোপুরি স্বাধীন হতে পারে তাহলে এই জাতির জন্য আরেকটি মাইলফলক রচিত হবে। আমরা আশা করব, এই রায়ের মাধ্যমে নিম্ন আদালতকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করে সম্পূর্ণরুপে সুপ্রিম কোর্টের কাছে ন্যাস্ত করবেন। এই রায়ের মাধ্যমে যদি নিম্ন আদালত স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে তাহলে নতুন করে এই বাংলাদেশ নতুনত্বের ছোয়া পাবে। এটিই হবে নতুন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ যাত্রার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি পদক্ষেপ। ১১৬ অনুচ্ছেদ বাতিল হওয়া জরুরী কারণ আইন মন্ত্রণালয় যাকে যেভাবে ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণ করে।
সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বিচার-কর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচারবিভাগীয় দায়িত্বপালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল-নির্ধারণ, পদোন্নতিদান ও ছুটি মঞ্জুরীসহ) ও শৃংখলাবিধান রাষ্ট্রপতির উপর ন্যস্ত থাকবে এবং সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তা প্রযুক্ত হবে। সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদকে বিচারবিভাগের স্বাধীনতায় বড় বাধা বলে মনে করেন রিটকারীরা।
ক্রাইম জোন ২৪