শিরোনাম
কিছু লোক বিদেশে টাকা পাচারের জন্যই কারখানা করেছেন: সাখাওয়াত হোসেনবিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে আজ কেমন করলেন বাংলাদেশি দুই সাঁতারু‘ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু’: হাসপাতাল ভাঙচুর, ফটকে তালাগাজায় খাদ্যের খোঁজে দুই দিনে প্রাণ গেল শতাধিক ফিলিস্তিনির: জাতিসংঘজুলাই হত্যাকাণ্ডে নিহত ১১৪ জনের মরদেহ তোলা হবে রায়েরবাজার গণকবর থেকেজাতীয় ঐক্য গড়তে হাজারো রাজবন্দীকে মুক্তি দিচ্ছেন ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টধর্ষণের দিন হাকিমির স্ত্রী-সন্তান ছিলেন ছুটিতে, অভিযোগ নারীরইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা স্লোভেনিয়ারমেসির দেহরক্ষী নিষিদ্ধজুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া চূড়ান্ত, প্রকাশ ৫ আগস্ট

অগ্নদগ্ধের ঘটনা আজও শরীর শিহরে ওঠে

অগ্নদগ্ধের ঘটনা আজও শরীর শিহরে ওঠে

২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর রাত ৩ টায় ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ আগুনে দগ্ধ হয়ে ৪৯ জন মারা যায়।

সেই সময় ঢাকা গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র কুশল কর্মকার। কুশল কর্মকার এবছর ঢাকা গ্রীন লাইফ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ফাইনাল ইয়ার (চূড়ান্ত পর্বের) পরীক্ষা দিয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সেই দিনের ঘটনা গনমাধ্যমকর্মীদের বনর্না দেয় কুশল কর্মকার। কুশল কর্মকার জানায়, ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগার পর চোখের সামনে মানুষ পুড়ছে, নিজের শরির আগুনের তাপে দগ্ধ হচ্ছে ঠিক তখনই জীবনে ঝুঁকি দগ্ধাবস্থায় মাঝ নদীতে ঝাপ দেন কুশল কর্মকার ।

ঘটনার রাতে কনকনে শীতের মধ্য সুগন্ধা নদিতে একটানা ৪৫ মিনিট সাঁতার কেটে এবং মৃত্যুপুরী থেকে প্রাণে বেঁচে যায়। মাঝরাতে হঠাৎ বিকট শব্দ, মানুষের চিৎকার ও ছোটাছুটিততে ঘুম ভাঙে তার।

মুহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পরে পুরো লঞ্চে। চোখের সামনে অনেকের শরীরে আগুন জ্বলছিলো। অনেক মায়ের কোলে শিশু থাকায় ও সাঁতার না জানার ভয়ে লঞ্চ থেকে লাফিয়েও পরতে পারেনি।

পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যারা সাঁতার না জেনেও নদীতে ঝাঁপ দিয়েছে। তাদের অনেকেই পানিতে ডুবে মারা গেছে। লঞ্চটিতে ছিলোনা কোন সুরক্ষাসামগ্রী এমনকি লাইফ জ্যাকেটও না।

যার ফলেই অনেকের মৃত্যু হয়েছে। যখন আগুনের উত্তাপে আর থাকতে পারছিলাম না তখন পোশাক খুলে ফেলে।জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লাফ দেই মাঝ নদিতে এরপর একটানা ঘন্টাব্যাপী কনকনে ঠান্ডার মধ্যে নদীতে সাঁতার কাটতে থাকি।

এমন সময় তেলবাহী জাহাজ যাচ্ছিল ওর পাশ থেকে। ঠান্ডায় মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিলো না। শুধু হাত দিয়ে ইশারা করি। ইশারা বুঝে জাহাজে তুলে নেয় আমায়।

জাহাজের লোকজন গরম পোশাক পড়তে দেয়। উদ্ধারকর্মীরা পরে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার বাবাকে ফোনে দূর্ঘটনায় কথা জানালে।

পরের দিন শুক্রবার সকালে বাবা আমায় ঝালকাঠি হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করেন।চোখে না দেখলে বলে বুঝাতে পারবো না সেদিন রাতের মৃত্যুপুরীর যন্ত্রনা।

আজীবন মনে থাকবে। ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়েছে।’ মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কুশল কর্মকারের সাক্ষাতের একপর্যায়ে তার বাবা কৃষ্ণ কর্মকার কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে সেইদিন বাঁচিয়েছে ঈশ্বর, ঈশ্বর বাঁচালে কেউ মারতে পারে না।

প্রসঙ্গত, সেইদিন ছিল বৃহস্পতিবার, ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর। ঢাকা সদরঘাট থেকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রায় চারশ যাত্রী নিয়ে বরগুনার উদ্দেশ্যে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চটি ঢাকা সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায়। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পৌঁছলে রাত ৩টার দিকে এতে আগুন ধরে যায়। পরে ঝালকাঠী সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দিয়াকুল এলাকায় নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হয়। লঞ্চ থেকে প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন যাত্রীদের অনেকে।দগ্ধ হয় শতাধিক এবং ৪৯ জন মারা যায়।

 

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button