শিরোনাম

কোরিয়ার কাছে হেরেও যেভাব মূল পর্বে যেতে পারে বাংলাদেশ

কোরিয়ার কাছে হেরেও যেভাব মূল পর্বে যেতে পারে বাংলাদেশ

ড্র করলেই মিলবে চূড়ান্ত পর্বের টিকিট। এমন সমীকরণ নিয়ে অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে আজ শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে নেমেছিল বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে নিজেদের মেলে ধরে দারুণভাবে। সমতায় রেখে বিরতিতে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে বদলে যায় সবকিছু। আফঈদা-সাগরিকা হজম করতে থাকেন একের পর এক। বাংলাদেশকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে সরাসরি মূলপর্বে নাম লেখাল কোরিয়া।

লাওসের জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরুতে বাংলাদেশের খেলা দেখে মনে হচ্ছিল এই ম্যাচে লড়াই হবে বেশ। দ্বিতীয় মিনিটে মাঝমাঠ থেকে মোসাম্মৎ সাগরিকার উদ্দেশে লম্বা পাস দেন স্বপ্না রানী। খানিকটা এগিয়ে গিয়ে কোরিয়ান গোলরক্ষক উই হাই বিনকে একা পেলেও বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি সাগরিকা।

১৪ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে শট নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তৃষ্ণা রানী। জোর না থাকায় সেই শট কোনো বিপদ তৈরি করতে পারেনি। তবে এক মিনিট পরই বাংলাদেশকে উল্লাসে ভাসান এই ফরোয়ার্ড।

১৫ মিনিটে সাগরিকার সঙ্গে ওয়ান-টু করে বক্সের ভেতর ঢুকে পড়েন শান্তি মার্দি। বাঁ প্রান্ত থেকে তাঁর শট কোরিয়ান গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দিলেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি বল পেয়ে প্রথম স্পর্শে জাল কাঁপান তৃষ্ণা।

পিছিয়ে পড়ার পর গোলশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে কোরিয়া। সমতায় ফিরতেও বেশি সময় লাগেনি। ১৯ মিনিটে বাঁ প্রান্ত থেকে আসা এক ক্রস কাজে লাগিয়ে ব্যবধান ১-১ করেন লি হায় উন। ২৩ মিনিটে কোরিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন জিওং জি ওন। তাঁর শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান বাংলাদেশ গোলরক্ষক স্বর্ণা রানী মণ্ডল। এরপরই একাদশে পরিবর্তন আনেন বাংলাদেশ কোচ পিটার বাটলার। শান্তিকে উঠিয়ে বন্যা খাতুন ও পূজা দাসের জায়গায় নাদিয়া আক্তার যুথীকে মাঠে নামান তিনি। ৪১ মিনিটে দূরপাল্লার আরেকটি শট ফিরিয়ে দারুণ দৃঢ়তা দেখান স্বর্ণা। ৪৫ মিনিটে সিনহা জাহান শিখার বাঁ পায়ের শট সহজেই তালুবন্দী করেন হাই বিন। যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে আবারও বাংলাদেশকে বিপদ থেকে বাঁচান স্বর্ণা। মাঝমাঠ থেকে থ্রু বল ধরে বাংলাদেশের রক্ষণকে পেছনে ফেলেন বেওম ইয়ে জু। স্বর্ণার তাই পোস্ট ছেড়ে সামনে উঠে আসা ছাড়া উপায় ছিল না। ইয়ে জুর শট পা দিয়ে ঠেকিয়ে বিরতির আগে স্বস্তি এনে দেন তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে বাংলাদেশকে চেপে ধরে কোরিয়া। ৪৮ মিনিটে সিনহা জাহান শিখার ভুলে বল পেয়ে যান ইয়ে জু। তাঁর থ্রু বল ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন হায় উন। ফাঁকায় থাকা অধিনায়ক চো হাই ইয়ংকে পাস দিতে কোনো দেরি করেননি তিনি। হাই ইয়ংও দারুণ প্লেসিং শটে এগিয়ে দেন কোরিয়াকে।

৫৭ মিনিটে ইয়ে জুর থ্রু বলে আবারও ফাঁকায় বল পেয়ে যান হাই ইয়ং। দারুণ দক্ষতায় তাঁকে গোলবঞ্চিত করেন স্বর্ণা। ৬০ মিনিটে আর আটকাতে পারেননি বাংলাদেশ গোলরক্ষক। হান মান সিওর লং পাসে বল জালে ঠেলে দিয়ে ব্যবধান ৩-১ করেন হাই ইয়ং। ম্যাচে এটি তাঁর দ্বিতীয় গোল

৬৩ মিনিটে যুথী ও মুনকি আক্তারকে তুলে নিয়ে সুরমা জান্নাত ও কানন রানীকে মাঠে নামান বাংলাদেশ কোচ। তবুও খুব একটা আটকানো যায়নি কোরিয়ার আক্রমণের জোয়ার। রক্ষণ সামলে বাংলাদেশও আক্রমণে উঠতে হিমশিম খাচ্ছিল। ৭২ মিনিটে হাই ইয়ংয়ের পাস থেকে ইয়ে জুর শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান স্বর্ণা।

৮১ মিনিটে আক্রমণের যাওয়ার সুযোগ পায় বাংলাদেশ। বক্সের বাইরে থেকে স্বপ্নার শট সহজে তালুবন্দী করেন কোরিয়ান গোলরক্ষক। ৮৫ মিনিটে বক্সের ভেতর হায় উনকে ফাউল করে বিপদ ডেকে আনেন নবীরণ খাতুন। পেনাল্টি পেয়ে হায় উন নিজেই ব্যবধান ৪-১ করেন। ৯০ মিনিটে হেডে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন এই ফরোয়ার্ড। যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে শেষ গোলটি আসে জিন হাই রিনের পা থেকে।

৩ ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ‘এইচ’ গ্রুপের শীর্ষে থেকে বাছাই শেষ করল কোরিয়া। ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ বাংলাদেশ। মূলপর্বে যেতে হলে থাকতে হবে আট গ্রুপের সেরা তিন রানার্সআপ। বাংলাদেশ ‍+ ৬ গোলগড় নিয়ে আছে তিনে। ওপরে জর্ডান (‍+ ১১) ও চাইনিজ তাইপে (‍+৭)। বাংলাদেশের সেই অবস্থান ধরে রাখত হলে হার কামনা করতে হবে লেবাননের (‍+২)। ‘ই’ গ্রুপে শেষ ম্যাচে আজ চীনের মুখোমুখি হবে তারা। ‍+ ১৩ গোল গড় নিয়ে শীর্ষে আছে চীন। সমান পয়েন্ট জর্ডানেরও।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button