১৩ মাসের বেতন বকেয়া, আন্দোলনে উপজেলা হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারীরা


বকেয়া বেতনের দাবিতে খুলনা সদর ও ৯ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটসোর্সিং কর্মচারীরা আন্দোলন করছেন। আজ বুধবার তাঁরা খুলনা নগরীর সিভিল সার্জন অফিসের সামনে অবস্থান, মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেন।
আজ দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নগরীর শামসুর রহমান রোডের সিভিল সার্জন অফিসের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা। মানববন্ধন ও সমাবেশে তাঁরা জানান, খুলনার সিভিল সার্জন গত ২৯ জুলাই এক চিঠিতে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের চাকরি নেই বিধায় তাঁদের বেতন দিতে তিনি দায়বদ্ধ নন বলে জানিয়েছেন। খুলনা সদর ও ৯ উপজেলায় ২১৪ জন কর্মচারী ১৩ মাস ধরে বিনা বেতনে চাকরি করছেন। তাঁরা নিরলসভাবে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, বহির্বিভাগ, ওয়ার্ড, রান্নাঘরসহ বিভিন্ন স্থানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। তাঁরা যে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছেন, তার সপক্ষে থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন।
বক্তারা বলেন, তাঁদের মেয়াদ বাড়ানোর চিঠি করার কথা অর্থবছরের শুরুতে জুলাই-আগস্ট মাসে। কিন্তু খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের হিসাবরক্ষক মাহফুজুর রহমান সেই চিঠি আটকে রেখে অর্থবছরের শেষে জুন মাসে ঠিকাদারদের ডেকে টাকা দাবি করেন। তিনি অন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেনের মাধ্যমে তাঁদের কাজ দেওয়ার পাঁয়তারা করছেন। সিভিল সার্জনের সঙ্গে ঠিকাদারের করা চুক্তিপত্রে রয়েছে পরবর্তী ঠিকাদার নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো কর্মচারীরা কাজ করবেন। সমাবেশ থেকে তিন দফা দাবি ঘোষণা করা হয়। দাবিগুলো হলো, বকেয়া ১৩ মাসের বেতন দ্রুত দিতে হবে, তাঁদের চাকরিতে বহাল রাখতে হবে এবং হিসাবরক্ষক মাহফুজকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে স্থায়ীভাবে অপসারণ করতে হবে।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ওয়ার্ডবয় আল আমিন, বটিয়াঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আয়া তপু মল্লিক, কয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ডবয় মাহবুবুর রহমান, রানা বিশ্বাস ও গৌতম বিশ্বাস।
এদিকে দুপুরে আন্দোলনরত আউটসোর্সিং কর্মচারীদের সঙ্গে দপ্তরে কথা বলেছেন সিভিল সার্জন। কর্মচারীরা জানান, সিভিল সার্জন তাঁদের জানিয়েছেন, ২৫-২৬ অর্থবছরের টেন্ডার না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের বেতনের দায়দায়িত্ব তিনি নেবেন না। যদি টেন্ডার হয়, ২৪-২৫ অর্থবছরে যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরাই যাতে কাজ পান, সে জন্য সুপারিশ করবেন।
এ বিষয়ে খুলনার সিভিল সার্জন মাহফুজা খানম বলেন, ‘আউটসোর্সিং কর্মচারীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে কর্মরত ছিলেন। তাঁদের বেতন চাওয়াটা নায্য। বিষয়টি আমি মন্ত্রণালয়ে অবহিত করেছি।’
খুলনা সিভিল সার্জন অফিসের হিসাবরক্ষক মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য না। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’