১২২ বছর আগের ‘বোতল বার্তা’ মিলল তাসমানিয়ার বাতিঘরে


অস্ট্রেলিয়ার তাসমানিয়া রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন বাতিঘর কেপ ব্রুনি লাইটহাউস থেকে ১২২ বছর পুরোনো একটি ‘বোতল বার্তা’ আবিষ্কৃত হয়েছে। সম্প্রতি ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত বাতিঘরটির ল্যান্টার্ন কক্ষে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতে গিয়ে এটি খুঁজে পান বিশেষজ্ঞ চিত্রশিল্পী ব্রায়ান বারফোর্ড। ল্যান্টার্ন কক্ষে একটি ক্ষয়প্রাপ্ত দেয়ালের ভেতর অস্বাভাবিক কিছু মনে হলে সেখানে একটি কাচের বোতল দেখতে পান ব্রায়ান। এর ভেতরেই ছিল একটি হাতে লেখা দুই পৃষ্ঠার চিঠি।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, চিঠিটি ১৯০৩ সালের ২৯ জানুয়ারিতে লেখা। লেখক ছিলেন জেমস রবার্ট মিচ, যিনি তখন হোবার্ট মেরিন বোর্ডের লাইটহাউস পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ওই চিঠিতে লাইটহাউসটিতে হওয়া বড় ধরনের সংস্কারের বিবরণ রয়েছে, যেমন—কাঠের সিঁড়ির পরিবর্তে নতুন লোহার পাকানো সিঁড়ি, নতুন কংক্রিটের মেঝে এবং নতুন ল্যান্টার্ন কক্ষ স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে।
এ ছাড়া আলো জ্বলার নতুন রীতির কথাও লিখেছেন মিচ। চিঠিতে প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী কর্মীদের নাম সহ খরচের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ২ হাজার ২০০ পাউন্ড। এই পরিমাণ অর্থ আজকের দিনে প্রায় ৪ লাখ ৭৪ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলারের সমান (বাংলাদেশি মুদ্রার মানে তা পৌনে চার কোটি টাকার বেশি)।
তাসমানিয়া পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিসের (পিডব্লিউএস) ঐতিহাসিক ঐতিহ্য বিভাগের ব্যবস্থাপক আনিতা ওয়াগহোর্ন বলেন, ‘চিঠিটি যখন বেরিয়ে এল, তখন কক্ষটিতে উত্তেজনার কমতি ছিল না।’ তাসমানিয়ান মিউজিয়াম অ্যান্ড আর্ট গ্যালারির সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞরা এটিকে খুব সাবধানে খুলে আর্দ্রতা প্রয়োগ করে সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করেন। ভবিষ্যতে চিঠিটি জনসাধারণের প্রদর্শনীর জন্য রাখা হবে। তরে এর জন্য নির্দিষ্ট কোনো স্থান এখনো নির্ধারিত হয়নি।
উল্লেখ্য, কেপ ব্রুনি লাইটহাউস প্রথম জ্বলে ১৮৩৮ সালে এবং ১৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এটি অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বিপজ্জনক জলপথে জাহাজ চলাচলে দিকনির্দেশনা দিয়েছে। ১৯৯৬ সালে এটির কার্যক্রম বন্ধ করে পাশেই সৌরশক্তিচালিত আরেকটি বাতিঘর বসানো হয়।
এই আবিষ্কারকে স্থানীয় ইতিহাসবিদেরা ‘সাম্প্রতিক সময়ে লাইটহাউস-সংক্রান্ত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খোঁজ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।