সাবেক স্ত্রীর আপত্তিকর ভিডিও ফেসবুকে, যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ


নেত্রকোনার মদনে সাবেক স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সানজিল মীর (২২) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে করা এই অভিযোগে সানজিল, তাঁর মা-বাবা ও চাচাকেও আসামি করা হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) বিকেলে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাইম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল শুক্রবার ভুক্তভোগী তরুণীর ভাই বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্ত সানজিল মীর নেত্রকোনার মদন উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের আলমশ্রী গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মীরের ছেলে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী তরুণী পোশাক কারখানায় চাকরির সুবাদে চট্টগ্রামে থাকতেন। অভিযুক্ত সানজিল মীর সেখানে পাশের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। প্রায়ই ওই তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন সানজিল। প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে ওই তরুণীর গোসল করার সময় গোপনে মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন তিনি।
পরে ভিডিও ফাঁসের ভয় দেখিয়ে গত ৭ এপ্রিল দেড় লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে তাঁকে বিয়ে করেন সানজিল।
এরপর ভুক্তভোগী তাঁর সঙ্গে স্বামীর বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু বিয়ের পরও সানজিল আরও বেশ কিছু আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন এবং বিভিন্ন অজুহাতে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই তরুণী বাধ্য হয়ে নিজের উপার্জনের পুরো অর্থও সানজিলকে দিয়ে দেন।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে, এরপর আরও যৌতুক দাবি করতে থাকেন সানজিল। ভুক্তভোগী যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সানজিল তাঁকে ইমো ভিডিও কলে অন্য পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও তৈরি করে অর্থ উপার্জনের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে দুই মাস আগে ওই নারী বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপরও সানজিল ভুক্তভোগীর নামে ‘ময়না তেতুলিয়া’ নামে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং নিজের ‘S M Sanjil Mir’ অ্যাকাউন্ট থেকে ভুক্তভোগীর আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে গত ১৭ জুলাই অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানালে তারা উল্টো খারাপ আচরণ করে ও হুমকি দেয়। পরবর্তীকালে ২১ জুলাই আদালতের মাধ্যমে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। কিন্তু অভিযুক্ত সানজিল মীর ডিভোর্সের পরও আপত্তিকর ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে চলেছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাইম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে এ ঘটনায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্তদের ধরতে চেষ্টা চলছে।