হত্যার দায়ে ৫ জনের ফাঁসি, রায়ের পর মারমুখী আচরণ দণ্ডপ্রাপ্তদের


ফরিদপুরে শওকত মোল্যা (২০) নামের এক চালককে হত্যা করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা (ইজিবাইক) ছিনতাইয়ের ঘটনায় পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে ফরিদপুর অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মাকসুদুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মেহেদী আবু কাওসার (২৬), জনি মোল্যা (৩১), রাজেস রবি দাস (৩০) ও রবিন মোল্যা (২৬) উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের পুলিশ পাহারায় কারাগারে পাঠানো হয়। এ সময় আসামিরা পুলিশের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেন, মারমুখী হয়ে উঠতে দেখা যায় আসামিদের।

এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি রাসেল শেখ (২৬) পলাতক রয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকে শহরের পশ্চিম খাবাসপুর এলাকার বাসিন্দা ও ভাড়াটে।
বাদশা শেখ (২৬) নামের অপর আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ১০ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি রাজবাড়ী জেলা সদরের মজলিসপুর এলাকার মুরাদ শেখের ছেলে। তিনি ছিনতাই হওয়া ইজিবাইকটি ক্রয় করেছিলেন বলে আদালত সূত্রে জানা যায়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর ইজিবাইক নিয়ে শহরে বের হন সালথা উপজেলার দেয়ালীকান্দা গ্রামের ও শহরের পশ্চিম খাবাসপুরের ভাড়াটে শওকত মোল্যা। ওই দিন তিনি রাতে বাড়িতে না ফেরায় স্বজনেরা খুঁজতে থাকেন। পরের দিন সকালে শহরের গোয়ালচামট মোল্যাবাড়ি সড়কের শেষপ্রান্তে একটি ধানখেতে শওকতের লাশ শনাক্ত করেন স্বজনেরা। এ ঘটনার পরের দিন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন নিহত ব্যক্তির বাবা আয়নাল মোল্যা।

মামলা করার পর তিন দিনের মধ্যে রহস্য উদ্ঘাটন করে পুলিশ। এরপর পাঁচজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে এবং ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আক্তার।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত কৌঁসুলি (পিপি) চৌধুরী জাহিদ হাসান খোকন বলেন, ‘আসামিরা ইজিবাইকটি ভাড়া করে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘোরেন। একপর্যায়ে কৌশলে ঘটনাস্থলে নিয়ে গলায় বেল্ট পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। আদালতে তাঁরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এবং হত্যাকাণ্ডটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক এই রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট প্রকাশ করছি।’
ফরিদপুর জজ কোর্টের পুলিশ পরিদর্শক নাজনীন খানম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসামিদের যেহেতু মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে উগ্র আচরণ করাটাই স্বাভাবিক। এমনটি হতেই পারে। তবে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য আগে থেকেই অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছিল।’