শিরোনাম

পঞ্চগড় ও নওগাঁ সীমান্ত দিয়ে ২৭ জনকে পুশ ইন করল বিএসএফ

পঞ্চগড় ও নওগাঁ সীমান্ত দিয়ে ২৭ জনকে পুশ ইন করল বিএসএফ

ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) পঞ্চগড় সদর ও তেঁতুলিয়া উপজেলার সীমান্ত দিয়ে ১৭ জন বাংলাদেশিকে পুশ ইন করেছে। গত বুধবার দিবাগত গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। তাঁদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ ও নারী ৯ জন। তাঁদের বাড়ি যশোর, নওগাঁ, সিলেট, খাগড়াছড়ি, বরিশাল, কক্সবাজার, গোপালগঞ্জ, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের বাঙ্গালপাড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিএসএফ ১০ জনকে পুশ ইন করে। অপর দিকে একই রাতে তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা দিয়ে আরও ৭ জনকে পুশ ইন করা হয়। পরে বিজিবির ঘাগড়া ও ভজনপুর বিওপির টহল দল পৃথক অভিযানে ১৭ জনকেই আটক করে।

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ হিল জামান বলেন, ‘পঞ্চগড় সদর সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন হওয়া ১০ জনকে বিজিবি থানায় হস্তান্তর করেছে। তাঁদের পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। আপাতত তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক মেজর কাজী আসিফ আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিজিবি সীমান্তের যেকোনো চোরাচালান প্রতিরোধ ও অনুপ্রবেশ রোধে সব সময় সতর্ক অবস্থানে আছে।’

এদিকে নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে পুশ ইন করার অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ধামইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর। তাঁদের মধ্যে দুজন যুবক ও আটজন নারী। তবে এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত বিজিবির পত্নীতলা ব্যাটালিয়নের (১৪ বিজিবি) পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

ধামইরহাট থানা সূত্রে জানা গেছে, পুশ ইন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন নড়াইলের লোহা গ্রামের মাধবহাট এলাকার আবদুল হাইয়ের মেয়ে আছমা বেগম (৪০), নড়াইলের দলসেতপুর গ্রামের মোকাম্মেল শেখের মেয়ে মুর্শিদা বেগম (৩৪), কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজার কালিপুর গ্রামের রইস মিয়ার মেয়ে পাখি বেগম (২৪), মানিক মিয়ার মেয়ে রুমা বেগম (২৫), পটুয়াখালীর বরিশাল গ্রামের দশমিনা এলাকার নবী হোসেনের মেয়ে কাকলি আক্তার (২৭)।

এ ছাড়া ঢাকার মাতুয়াইল এলাকার আবদুল মান্নান শেখের মেয়ে রুজিনা আক্তার (৩৩), আবদুল মান্নান সরকারের মেয়ে কোহিনুর বেগম (২৬), মোহাম্মদ শেখের মেয়ে নাসরিন বেগম (৩৩), যশোরের সোনাপুর গ্রামের আবদুল ডালিমের ছেলে সুমন হোসেন (২৭) এবং দিনাজপুরের দক্ষিণ সাদিপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬)।

আগ্রাদ্বীগুন বিওপির নায়েক সুবেদার জিহাদ এ বিষয়ে তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়া আমরা কিছুই বলতে পারব না।’ তবে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

নওগাঁর ধামইরহাটে সীমান্ত দিয়ে বিএসএফের পুশ ইন করা ১০ জনকে আটক করে বিজিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা
নওগাঁর ধামইরহাটে সীমান্ত দিয়ে বিএসএফের পুশ ইন করা ১০ জনকে আটক করে বিজিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা

ওসি ইমাম জাফর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ভারতীয় সীমান্ত থেকে এক কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আগ্রাদ্বীগুন ইউনিয়নের মহেশপুর নামক এলাকায় বাংলাদেশি (২ জন পুরুষ ৮ জন মহিলা) ১০ নাগরিককে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করেন বিজিবির সদস্যরা। পরে তাঁদের থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

ওসি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে উপজেলা প্রশাসন। আত্মীয়স্বজনকে পাওয়া গেলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। যদি পরিবারের সদস্যদের না পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে আদালতের মধ্য দিয়ে আটককৃতদের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. জেসমিন আক্তার বলেন, ‘আপাতত তাঁদের থাকা এবং খাওয়ার ব্যবস্থা আমরা করব। তবে আটককৃতদের কাছ থেকে থানার পুলিশ বিস্তারিত তথ্য নিয়ে কোর্টের মাধ্যমে নাকি অন্য কোন পদ্ধতিতে ব্যবস্থা নেবে, এ বিষয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে সমাধান করা হবে।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button