বিশ্বকে জানিয়ে দেব, বর্তমান সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মৌলবাদ: গোবিন্দ প্রামাণিক


বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেছেন, ‘নির্বাচন সামনে। আমরা আগেই বলেছি, পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা না হলে হিন্দু সম্প্রদায় ভোটকেন্দ্রে যাবে না। এই নির্বাচনী ব্যবস্থাকে আমরা প্রত্যাখ্যান করছি এবং বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দেব, বর্তমান সরকারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে মৌলবাদ। এই সরকারের প্রত্যেকটি মানুষ হিন্দুবিদ্বেষী। তাই আমরা এই মৌলবাদী চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে থাকতে চাই না। আমাদের পৃথক করে দেন।’
আজ বুধবার (৩০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক এসব কথা বলেন। রংপুরের গঙ্গাচড়ায় ২২টি হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
গোবিন্দ প্রামাণিক আরও বলেন, ‘আমরা, হিন্দু সম্প্রদায়, বর্তমান সরকারের গঠিত সকল সংস্কার কমিশনকে প্রত্যাখ্যান করছি। এই সংস্কার কমিশন বা উপদেষ্টা পরিষদে আমাদের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। ফলে জনগণও মনে করছে, সরকার যাদের গুরুত্ব দেয় না, তাদের আমরাও গুরুত্ব দেব না। এই মনোভাবের কারণেই হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর একের পর এক হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ চলেছে। প্রশাসনও এসব থেকে আমাদের রক্ষার কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি।’
গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘আমরা কি আরব থেকে এসেছি? না ভারত থেকে এসেছি? আমরা তো এই দেশের ভূমিপুত্র। হাজার বছর ধরে এই ভূমিতে বাস করছি। তবু আজ নিজ ভূমিতে আমরা পরবাসী। আমাদের সন্দেহের চোখে দেখা হয়, অবহেলা করা হয়, নাগরিক মর্যাদা পর্যন্ত অস্বীকার করা হয়। যারা আমাদের ন্যূনতম মূল্য দেয় না, সেই সরকারকেও আমরা মূল্য দিই না। তাই আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এই সরকারকে প্রত্যাখ্যান করলাম।’
গঙ্গাচড়ার ঘটনার বিষয়ে গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিচ্ছি, গঙ্গাচড়ার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের রাষ্ট্রীয় খরচে পুনর্বাসন করতে হবে। বাড়িঘর নির্মাণ করতে হবে। ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আর এই সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আজ পর্যন্ত কোনো কার্যকরী সাফল্য নেই।’
আগামী শুক্রবার থেকে সারা দেশে ভোট বর্জন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে গোবিন্দ প্রামাণিক বলেন, ‘নির্যাতিত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আলাদা শক্তি হিসেবে গড়ে উঠবে। বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা ভোটকেন্দ্রে যাব না, ভোট দেব না। এই মৌলবাদী সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন যেন না হয়, সে জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন হিন্দু মহাজোটের সহসভাপতি দুলাল চন্দ্র মণ্ডল, যুগ্ম মহাসচিব হেমন্ত কুমার দাস, বিশ্বনাথ মোহন্ত, নকুল চন্দ্র মণ্ডল, শুভ মজুমদার, সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর কুমার বর্মণ, ঢাকা মহানগর সভাপতি শ্যামল ঘোষ, হিন্দু যুব মহাজোটের সভাপতি গৌতম সরকার অপু, সাধারণ সম্পাদক মৃণাল কান্তি মধু, প্রধান সমন্বয়কারী সুজন গাইন, সহসভাপতি তপন মজুমদার, দপ্তর সম্পাদক সবুজ অধিকারী প্রমুখ।