শ্রীপুরে ‘এইচ টি ইমামের’ বন্ধ কারখানায় লুটের চেষ্টা, ধাওয়া করে আটক ৬


গাজীপুরের শ্রীপুরে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া পিপিএস পাইপ অ্যান্ড প্লাস্টিক কারখানায় লুটের চেষ্টাকালে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় ক্ষুব্ধ জনতা তাঁদের পিটিয়ে আহত করে। পুলিশ তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করেছে।
গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে বরমী ইউনিয়নের সাতখামাইর গ্রামের মাওনা-বরমী আঞ্চলিক সড়কের পিপিএস পাইপ অ্যান্ড প্লাস্টিক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের একটি হলো পিপিএস পাইপ অ্যান্ড প্লাস্টিক কারখানা। ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। কারখানাটি ইসলামী ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানাটির দায়িত্বে থাকা ইসলামী ব্যাংক শ্রীপুর শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গতকাল রাত ১১টার দিকে কারখানার তৃতীয় তলা থেকে ডাকাতির ঘটনা দেখতে পাই। পরে কর্তৃপক্ষ, পুলিশ ও স্থানীয় লোকদের বিষয়টি জানাই। স্থানীয় লোকজন এসে পড়লে ডাকাতেরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ এসে স্থানীয়দের নিয়ে ধাওয়া করে তাঁদের মধ্য থেকে ছয়জনকে আটক করতে সক্ষম হয়।’
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘১০ থেকে ১২ জনের একটি ডাকাত দল কারখানা ডাকাতি করতে আসে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে কারখানার সীমানা প্রাচীর টপকে কয়েকজন প্রবেশ করেন। এরপর বাকি সদস্যরা কারখানায় প্রবেশ করে কারখানার নিরাপত্তা প্রহরীকে হাত-পা বেঁধে মারধর করেন।’
আটক ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বাঘটিয়া গ্রামের মো. সোহেল মিয়া (৩২), একই তারাকান্দা উপজেলার মো. এমদাদুল হক (৪৫), বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার কামুলা গ্রামের মো. ফারুক (৩২), নওগাঁর রানীনগর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের আরিফ (৩০), নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার বালুর মাঠ এলাকার সীমান্ত (২১) ও চাঁদপুরের মতলবপুর গ্রামের ইব্রাহীম (২৩)।
কারখানার নিরাপত্তা প্রহরী মো. মকবুল হোসেন বলেন, ‘অপরিচিত কিছু লোক গেটের ওপর দিয়ে ভেতরে ঢুকে আমার হাত-পা বেঁধে মারধরে করে। আমাকে ফেলে রেখে তাঁরা ডাকাতি করতে শুরু করেন। লোকজন চলে এলে ডাকাতেরা সীমানা দেয়াল টপকে বাইরে চলে যান।’
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আজগর হোসেন সোহাগ বলেন, ‘সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে পুলিশ আহত ছয় ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। গুরুতর আহত সোহেল ও এমদাদুলকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওই কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ডাকাতেরা কারখানার যন্ত্রপাতি লুটপাট করতে এসেছিল। খবর পেয়ে আমি এবং পুলিশের একাধিক টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। ডাকাতেরা পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ স্থানীয় জনতার সহায়তায় ধাওয়া করে ছয় ডাকাতকে আটক করতে সক্ষম হই। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তাঁরা সবাই আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য।’