শিরোনাম

সেই চেয়ারম্যান লাক মিয়া ৪ দিনের রিমান্ডে

সেই চেয়ারম্যান লাক মিয়া ৪ দিনের রিমান্ডে

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান লাক মিয়াকে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমান রিমান্ডে নেওয়ার এই নির্দেশ দেন।

বিকালে তাকে আদালতে হাজির করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। শুনানী শেষে আদালত ৪ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

দুদকের বিশেষ পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

রিমান্ড আবেদনের তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, আসামির ব্যাংক হিসাবে ১৪ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এসব টাকার উৎস জানতে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

দুদকের প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, আসামির বিরুদ্ধে ১৪ হাজার কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি ঘুষ নিয়েছেন, দুর্নীতি করেছেন, সেটা জানতেই জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। তার বিরুদ্ধে ৫৫ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অথচ গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া গেছে তিন কোটি টাকা।

আসামিপক্ষে তার আইনজীবী মোবারক হোসেন রিমান্ড বাতিল চেয়ে বলেন, লাক মিয়া ১৯৯০ সাল থেকে ব্যবসা করেন। তিনি ২০১১ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার বাবার পৈতৃক সম্পত্তি রয়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ থাকলে এনবিআর মামলা করতো। রিমান্ডের কোনো যৌক্তিকতা নেই। যদি জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হয়, তাহলে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ আছে। তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত। তিনি পরিস্থিতির শিকার। নিয়মিত সরকারকে কর দিয়ে যাচ্ছেন।

এরপর বিচারক বলেন, আসামি ও রাষ্ট্রের স্বার্থে সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন। এজন্য তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলো।

এর আগে গত ৬ মার্চ লাক মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলার এজাহারে বলা হয়, নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান লাক মিয়ার বিরুদ্ধে ৫৫ কোটি ২৩ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার ৪৯ ব্যাংক হিসাবে ১৪ হাজার ৩৭৬ কোটি লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অভিযোগ রয়েছে, নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বাবুর ছত্রছায়ায় সম্পদের পাহাড় গড়েছেন লাক মিয়া। এক যুগ আগেও তেমন কোনো সম্পদ ছিল না লাক মিয়ার। ২০১২ সালে খুলেছেন আয়কর ফাইল। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তার নামে রয়েছে ৪৫০ বিঘা জমি। ঢাকায় আছে ১১টি বহুতল বাড়ি। ব্যাংক হিসাবে হাজার হাজার কোটি টাকা লেনদেনের প্রমাণও পাওয়া গেছে। লাক মিয়া এত সম্পদ গড়েছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর। ১০ বছর নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকার সময়।

অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করে তা বিক্রি করার অভিযোগও রয়েছে লাক মিয়ার বিরুদ্ধে। এজন্য তাকে ‘মাটি খেকো’ লাক মিয়াও বলা হয়।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button