জিএসপি প্লাস সুবিধা টিকিয়ে রাখতে ডেনমার্কের সহযোগিতা চায় বিজিএমইএ


বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর তৈরি পোশাক খাতে জিএসপি প্লাস (জেনারালাইজড সিস্টেম অফ প্রেফারেন্সেস প্লাস) সুবিধা সংকোচিত হতে পারে এবং জিএসপি প্লাসের থ্রেশহোল্ডের (নির্দিষ্ট সীমা) সমস্যায় পড়তে পারে। তাই পোশাক শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বজায় রাখতে জিএসপি প্লাস থ্রেশহোল্ডের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডেনমার্ক সরকারের সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। একই সঙ্গে ডেনমার্কে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়ার বিষয়টিও নজরে আনা হয়েছে।
আজ সোমবার বাংলাদেশে নিযুক্ত ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলারের সঙ্গে আলোচনায় বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান এসব বিষয় তুলে ধরেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি-নির্ধারকদের কাছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন।
রাষ্ট্রদূত রাজধানীর বিজিএমইএর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে তারা প্রধানত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বর্তমান অবস্থা, বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি, চ্যালেঞ্জ এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য শিল্পের অগ্রাধিকারসমূহ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
এ সময় বিজিএমইএ সহ-সভাপতি মোঃ রেজোয়ান সেলিম এবং পরিচালক শেখ হোসেন মোহাম্মদ মোস্তাফিজ।
আলোচনার শুরুতেই ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার বলেন, ডেনমার্ক তাদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ০.৭ শতাংশ উন্নয়নশীল দেশগুলোর উন্নয়নে ব্যয় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পোশাক শিল্পের সাসটেইনেবিলিটি ও সার্কুলারিটি ইস্যুগুলোতে এবং শিল্পকে জ্বালানি দক্ষ করে তুলতে ডেনমার্ক ও বাংলাদেশ কিভাবে একসাথে আরও কাজ করতে পারে, সেই সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি পোশাক শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বজায় রাখতে জিএসপি প্লাস থ্রেশহোল্ডের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ডেনমার্ক সরকারের সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি-নির্ধারকদের কাছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন।
মাহমুদ হাসান খান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে ডেনমার্কের বাজারে বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানি কমে যাওয়ার প্রবণতা দৃশ্যমান, যা শিল্পের জন্য মোটেও শুভ নয়। তিনি বিষয়টি দেখার জন্য রাষ্ট্রদূত মহোদয়কে অনুরোধ জানান।
বিজিএমইএ সভাপতি পোশাক শিল্পের জন্য একটি সমন্বিত আচরণ বিধি প্রনয়নে ব্র্যান্ডদের সমর্থন আদায়ে উদ্যোগী ভূমিকা পালনের জন্যও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, একটি সমন্বিত আচরণ বিধি নিরীক্ষা প্রক্রিয়া সহজতর করবে, কারখানার উপর চাপ কমাবে এবং শিল্পকে আরও নৈতিক, টেকসই এবং দায়িত্বশীল করে তুলবে।
ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার বলেন, পরিচ্ছন্ন ও সবুজ প্রযুক্তিতে ডেনমার্ক বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করছে এবং ডেনমার্ক এই অংশীদারিত্ব আরও বাড়াতে আগ্রহী। বিশেষ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানি দক্ষতা, সার্কুলার অর্থনীতি, টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিযোজন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রভৃতি খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদারে আগ্রহী ডেনমার্ক।