জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরে ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত ৩


ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার তিন মাস পর শ্রীনগরে সেনাবাহিনীর অভিযানে ৩ সন্দেহভাজন অস্ত্রধারীকে হত্যা করা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী নিহতদের ‘পাকিস্তানি’ বলে দাবি করেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্র জানিয়েছে, নিহত এই তিনজনই পেহেলগামে ২৬ জন হত্যার মূল হোতা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, শ্রীনগরের নিকটবর্তী লিডওয়াস এলাকায় পাহাড়ঘেঁষা মহাদেব জঙ্গলে ভারতীয় সেনাবাহিনী, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এবং সিআরপিএফ যৌথ অভিযান চালায়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন মহাদেব।’
সূত্র জানিয়েছে, দাচিগাম জঙ্গলে সন্দেহজনক এক রেডিও বার্তা শনাক্ত করে সেনা গোয়েন্দারা। এরপর স্থানীয় গুজ্জর ও বকরওয়াল সম্প্রদায়ের কয়েকজন অস্ত্রধারীদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য দেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে একাধিক সেনা দল ওই এলাকায় পাঠানো হয়। স্থানীয় সময় সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ২৪—স্টেট রাইফেলস এবং ৪-প্যারা মিলিশিয়া বাহিনীর সদস্যরা ৩ অস্ত্রধারীকে চিহ্নিত করেন এবং তাদের হত্যা করেন।
অস্ত্রধারীদের লুকানোর জায়গা থেকে বেশ কয়েকটি গ্রেনেড ও রেশন উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতদের পরিচয় শনাক্তের কাজ চলছে। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর পেহেলগাম হামলার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছে সেনা সূত্র।
এর আগে, জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে স্থানীয় দুই বাসিন্দা—পারভেজ আহমদ জোথার ও বশির আহমদকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে এই অভিযান এমন এক সময়ে চালানো হলো, যখন ভারতীয় পার্লামেন্টে পেহেলগাম হত্যাকাণ্ড এবং ‘অপারেশন সিন্দুর’ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। বিরোধী দল বারবার সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, পেহেলগাম হামলার অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার বা হত্যা না করতে পারার ব্যর্থতা নিয়ে।
প্রসঙ্গত, তিন মাস আগে কাশ্মীরের বাইসরান ভ্যালিতে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এই হামলার দায় স্বীকার করে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ নামে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তইবার একটি ছায়া সংগঠন। সেদিনের ঘটনায় পর্যটকদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায় অস্ত্রধারীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তারা কেবল পুরুষদের টার্গেট করে।
তদন্তকারীরা আগেই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, হামলায় জড়িতদের মধ্যে একজন ছিল সুলাইমান শাহ। তিনি গত বছর শ্রীনগর-সোনমার্গ হাইওয়েতে জেড-মোর টানেল নির্মাণকাজে যুক্ত সাত শ্রমিককে হত্যায় অংশ নিয়েছিলেন বলেও সন্দেহ করা হয়।