লাশ নিয়ে দোকানের সামনে ক্ষিপ্ত স্বজনদের অবস্থান, পালালেন দোকানদার


ঠাকুরগাঁওয়ে বিচারের দাবি নিয়ে এক কাপড়ের দোকানের সামনে ললিত বণিক (৪০) নামে এক স্বর্ণের কারিগরের লাশ রেখে বিক্ষোভ করেছে তাঁর পরিবার। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার পর থেকে রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ বাজারের রেখা ক্লথ স্টোরের সামনে তারা অবস্থান নেয়। মৃতের স্বজনদের অভিযোগ, আজ দুপুরে তিন হাজার টাকার জন্য এক কাপড়ের দোকানদার আব্দুর রহমান ললিতকে মারধর করেন। লজ্জায় ও অপমানে তিনি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি তাদের। ।
স্বর্ণের কারিগর ললিত বণিক বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ভানোর ইউনিয়নের বণিকপাড়া গ্রামের মংলু বণিকের ছেলে।
কারিগরের ছেলে শুভ বণিক জানান, নেকমরদ বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী আব্দুর রহমানের কাছে বাকিতে কাপড় কিনেছিলেন তাঁর বাবা। তিন হাজার টাকা বকেয়া ছিল। আজ দুপুরে বকেয়া টাকার জন্য তাঁর বাবাকে টেনেহিঁচড়ে দোকানে নিয়ে মারধর করা হয়। তাঁর বাবা অপমান সইতে না পেরে গ্যাসের ট্যাবলেট খান।
শুভ বণিক আরও জানান, প্রথমে রাণীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে দিনাজপুর মেডিকেলে নেওয়ার পথে তাঁর বাবা মারা যান। এরপর লাশ নিয়ে তাঁরা আব্দুর রহমানের দোকানের সামনে অবস্থান নেন।
সুজন বণিকের দোকানে কর্মচারী ছিলেন ললিত বণিক। তিনি জানান, ছেলে ও পুরো বাজারের লোকজনের সামনে মারধর ও অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যখন আমাদের কাছে ক্ষমা চাইতে শুরু করে, তখন বুঝতে পারি, সে গ্যাসের ট্যাবলেট খেয়েছে।’
এই মৃত্যুর ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানিয়েছেন ললিতের স্বজনেরা ও বাজারের লোকজন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে, রাত সাড়ে ৮টার পরে পুলিশ এসে স্বজনদের বুঝিয়ে লাশ ও তাঁদের রাণীশংকৈল থানায় নিয়ে গেছে।
এদিকে এ ঘটনার পর দোকান বন্ধ করে পালিয়েছেন কাপড়ের দোকানমালিক আব্দুর রহমান। বাড়িতে খোঁজ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর স্ত্রী সেলিনা আক্তার বলেছেন, ‘টাকা পাইলে তো চাইবেই। ওদের স্বভাব হয়ে গেছে। মামলা করবে করুক, কোনো চিন্তা করি না।’ তাঁর স্বামী কাজে বাইরে আছেন বলে জানান তিনি।
রাণীশংকৈল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরশেদুল হক জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ গেছে। স্বজনেরা অভিযোগ দিলে মামলা হবে।