শিরোনাম

নীলফামারীর ডিমলায় তিন বছরেও হয়নি ৩ স্কুলের ভবন

নীলফামারীর ডিমলায় তিন বছরেও হয়নি ৩ স্কুলের ভবন

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার জ্ঞানাঙ্কুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চার কক্ষের পুরোনো টিনশেড ঘর ভেঙে নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। শেষ হওয়ার কথা পরের বছর এপ্রিলে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। শ্রেণিকক্ষ সংকটে প্রতিষ্ঠানটিতে জরাজীর্ণ টিনের চালা ঘরে পাঠদান চলছিল। সম্প্রতি তাও ঝড়ে উড়ে গেছে।

এ ছাড়া উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই বাস্তুহারা ও ছোটখাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজের অবস্থাও তিন বছর ধরে একই। নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শেষ না হওয়ায়, শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলছে জরাজীর্ণ টিনের চালার ঘরে।

এ পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। বিশেষ করে, বৃষ্টি বা দুর্যোগের সময় টিনের ঘরে পাঠদান কার্যক্রম চালানো খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকদের অভিযোগ, ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে মেয়াদ বাড়িয়েও নির্মাণকাজ শেষ হচ্ছে না। কিছু শিক্ষার্থী এ সমস্যার কারণে অন্যত্র চলে যাচ্ছে, যা বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।

উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে গেছে, ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিদ্যালয়গুলোর জন্য বহুতল ভবন নির্মাণে ৩ কোটি ২১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। তিনটি প্যাকেজে এমএইচ করপোরেশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পায়। তবে কাজ সম্পন্ন করছেন সাব-ঠিকাদার শরিফুল ইসলাম। ২০২২ সালের জুলাইয়ে নির্মাণকাজ শুরু হয়। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে জুনে কাজ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে শেষ করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ার অজুহাতে কাজ বন্ধ রাখা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, জ্ঞানাঙ্কুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটির তিনতলার ছাদ ঢালাই করা হয়েছে। তবে নিচতলার মেঝে ঢালাই করা হয়নি। কক্ষের দরজা-জানালা লাগানো হয়নি। শৌচাগার নির্মাণ হয়নি। ভবনের কিছু অংশে পলেস্তারা লাগানো হলেও কক্ষের দেয়াল নির্মাণ ও রঙের কাজ বাকি। পাশেই জরাজীর্ণ টিনের চালাঘরের ছোট ছোট ৩টি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলত। সম্প্রতি ঝড়ে তাও উড়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের এখন নির্মাণাধীন ভবনের খোলা ছাদের নিচে পাঠদান করানো হচ্ছে।

একই চিত্র উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই বাস্তুহারা ও ছোটখাতা সরকারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। ভবনের নির্মাণকাজে ধীরগতির কারণে জরাজীর্ণ টিনের খুপরি ঘরে পাঠদান চলছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এবং পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএইচ করপোরেশনের মোস্তাক হোসেন বাবু বলেন, ‘কাজগুলো অপারেট করছেন সাব-ঠিকাদার শরিফুল ইসলাম দুলাল। আপনি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’ পরে শরিফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কয়েকবার কল দিলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল ইসলাম বলেন, নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় ঠিকাদার কাজ বন্ধ রেখেছিলেন। দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। আগামী দুই মাসের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। কাজ শেষ না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button