ঝগড়া মেটানোর আশ্বাস দিয়ে নারীকে ধর্ষণ


মাদারীপুরের এক যুবকের বিরুদ্ধে আত্মীয়তার সুযোগ নিয়ে এক নারীকে ধর্ষণ এবং সেই ঘটনার ভিডিও ধারণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত যুবক রাহাত ওরফে শুভ (৩০) মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামের মতিউর রহমান সেলিম ওরফে সেকান্দার শেখের ছেলে এবং পেশায় প্রাইভেটকার চালক। ভুক্তভোগী নারী জানিয়েছেন যে, রাহাত তার আত্মীয় এবং পারিবারিক প্রয়োজনে মাঝে মাঝে তার পিত্রালয়ে আসা-যাওয়া করত।
ভুক্তভোগী নারী জানায়, একদিন তার স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য ঘটে এবং যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর সুযোগে, ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় শুভ তাকে ঢাকা পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে প্রাইভেটকারে করে মাদারীপুরের কুতুবপুর থেকে নিয়ে যায়।
এসময় শুভ তাকে শিবচর উপজেলার পাকদী এলাকায় নিয়ে একটি বাসায় কাজ করার কথা বলে গাড়ি থামায়। তারপর, সে নেশাজাতীয় দ্রব্য মেশানো রুমাল দিয়ে ওই নারীর মুখ চেপে ধরে। এর পর ওই নারী অচেতন হয়ে পড়লে তাকে কাইয়ুম মিয়ার ভাড়া বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় সে মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে এবং কিছু অশ্লীল ছবি তোলে।
রাত ১০টার দিকে ওই নারীর জ্ঞান ফিরে এলে তাকে ধর্ষণের ভিডিও এবং ছবি দেখানো হয়। শুভ এরপর তাকে ভয় দেখিয়ে বলে, যদি এ ঘটনা কাউকে জানানো হয় তবে সেই ভিডিও এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ইউটিউবে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। পরে শুভ তাকে বাসায় ফিরিয়ে নিয়ে আসে।
ভুক্তভোগী নারী জানান, এর পর থেকে সে শুভর কাছে তার মোবাইল ফোন থেকে অশ্লীল ভিডিও এবং ছবি ডিলিট করার জন্য অনুরোধ জানায়, কিন্তু শুভ তা করেনি। বরং, শুভ তাকে ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন সময় শারীরিকভাবে নির্যাতন চালাতে থাকে এবং ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আরও কয়েকবার তাকে ধর্ষণ করে।
শুভ তাকে ঢাকায়ও নিয়ে যায় এবং সেখানে স্ত্রী পরিচয়ে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তার সঙ্গে বসবাস করে। এসব ঘটনা চলতে থাকে, এবং শুভ তার কাছ থেকে নগদ তিন লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এমনকি, শুভ ব্রাক, আশা এবং সিএসএস এনজিও থেকে তার নামে দুই লাখ টাকা লোন তুলিয়ে নেয় এবং সেই কিস্তির টাকা ভুক্তভোগী নারীকে পরিশোধ করতে হয়।
অবশেষে, চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি শুভ তার হোয়াটসঅ্যাপে কিছু অশ্লীল ছবি পাঠিয়ে তাকে মাগুরা গ্রামে তার বাড়িতে যেতে বলে। এরপর সে বাধ্য হয়ে শুভর বাড়িতে গেলে, তাকে সেখানে আবার ধর্ষণ করা হয় এবং ভিডিও চিরতরে ডিলিট করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী মাদারীপুর সদর মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন এবং সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।