শিরোনাম

ভরাটের ১০ দিন পরই কলেজমাঠে হাঁটুপানি

ভরাটের ১০ দিন পরই কলেজমাঠে হাঁটুপানি

এবার পানিতে গেল যশোরের মনিরামপুর মুক্তেশ্বরী ডিগ্রি কলেজের মাঠ ভরাটের সাড়ে তিন লাখ টাকা। টিআর ও কলেজ ফান্ডের বরাদ্দের টাকায় নদী খুঁড়ে বালু দিয়ে ভরাটের ১০-১৫ দিনের মাথায় ডুবে গেছে কলেজের মাঠ। এখন কলেজের মাঠে হাঁটুপানি। এ ছাড়া প্রায় এক ফুট পরিমাণ পানিতে ডুবে গেছে ভবনের নিচতলার শ্রেণিকক্ষ।

স্থানীয়রা বলছেন, ইউএনও নিজেই এই কলেজের সভাপতি। তিনি মোটা অঙ্কের টাকা কলেজের মাঠ ভরাটের জন্য বরাদ্দ নিয়ে লোক ভাড়া করে কলেজের পাশের মুক্তেশ্বরী নদী খুঁড়ে বালু তুলে দায়সারাভাবে মাঠ ভরাটের কাজ করিয়েছেন। বরাদ্দের অর্থ নামমাত্র ব্যবহার করে বাকি টাকা লোপাট করেছেন তিনি।

স্থানীয় একাধিক সূত্র বলছে, মাঠ আরও দুই ফুট উঁচু করে ভরাট করলে জলাবদ্ধ হতো না। কিন্তু সে পরিমাণ কাজ হয়নি। দায়সারা কাজ করে টাকা লুটপাট করা হয়েছে। নদীর বালুতে মাঠের কোথাও দুই ফুট আবার কোথাও পাঁচ ফুট উঁচু করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেন মণ্ডল।

জানা গেছে, ভবদহের অঞ্চলভুক্ত হওয়ায় মুক্তেশ্বরী ডিগ্রি কলেজের মাঠ বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধ থাকে। এ ছাড়া মাঠের পানি শ্রেণিকক্ষে ঢুকে যায়। এতে পাঠদান বাধাগ্রস্ত হয়। এই সমস্যা সমাধানে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্পের আওতায় কলেজের মাঠ মাটি দিয়ে ভরাটের জন্য দেড় লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তর। এ ছাড়া কলেজ ফান্ড থেকে আরও দুই লাখ টাকাসহ মোট সাড়ে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

সম্প্রতি সেই টাকা দিয়ে মাটি না কিনে মুক্তেশ্বরী নদী খনন করে বালু তুলে কলেজ মাঠে ফেলেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ইউএনও নিশাত তামান্না। এ নিয়ে গত ২৬ জুলাই আজকের পত্রিকায় ‘প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নদীর বালুতে কলেজের মাঠ ভরাট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর কাজ বন্ধ করে তড়িঘড়ি বালু তোলা সরঞ্জাম নদী থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।

স্থানীয়দের একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাঁচবাড়িয়া এলাকার এক ব্যক্তি ঘের কেটে কলেজ মাঠে মাটি দিতে চেয়েছিলেন। ঘের কাটার শর্তে কলেজের পক্ষ থেকে জমির মালিক কোনো টাকা চাননি, শুধু মাটি কাটার খরচের বিনিময়ে তিনি কলেজে মাটি দিতে চেয়েছেন। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাতে রাজি হয়নি। পরে ইউএনওর পরামর্শে নদীর বালু তুলে কলেজ মাঠে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেন মণ্ডল বলেন, ‘সরকারি দেড় লাখ আর কলেজের দুই লাখ টাকাসহ মোট সাড়ে তিন লাখ টাকায় বালু তুলে কলেজ মাঠে দেওয়া হয়। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে কলেজ মাঠে ও শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়েছে। আমরা ভবনের নিচতলায় ক্লাস নিচ্ছি না। ইউএনওর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁর পরামর্শে নতুন ভবন বরাদ্দ চেয়ে অধিদপ্তরে কাগজপত্র পাঠিয়েছি।’

অভিযোগের বিষয়ে কলেজের সভাপতি ইউএনও নিশাত তামান্না বলেন, ‘কোনো অনিয়ম হওয়ার সুযোগ নেই। আমি সরাসরি মাঠ ভরাটের কাজ তত্ত্বাবধান করিনি। শিক্ষকেরা মিলিতভাবে কলেজ উন্নয়নে কাজ করেছে। কমিটি করা হয়েছিল, সেই কমিটির মাধ্যমে কাজ হয়েছে। সবকিছুর হিসাব অধ্যক্ষর কাছে আছে।’ মাঠ ডুবে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য চেষ্টা করব।’


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button