শিরোনাম

প্রতীক্ষার অবসানেও উচ্ছ্বাসে ভাটা

প্রতীক্ষার অবসানেও উচ্ছ্বাসে ভাটা

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলার সংযোগকারী মওলানা ভাসানী সেতু আজ বুধবার দুপুরে উদ্বোধন হচ্ছে। তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির দৈর্ঘ্য ১৪৯০ মিটার। সেতুটি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর ঘাটের সঙ্গে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার সড়ক যোগাযোগে নতুন দুয়ার উন্মোচন হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গাইবান্ধায় সেতুস্থলে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি উদ্বোধন করবেন।

গাইবান্ধা এলজিইডির তত্ত্বাবধানে সেতুটি নির্মাণ হলেও এর মূল সুবিধাভোগী হবে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বাসিন্দারা। বিশেষ করে কুড়িগ্রামের উলিপুর, চিলমারী ও রৌমারী উপজেলার বাসিন্দাদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে এই সেতু।

এটি চিলমারীবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার ফসল। চিলমারী থেকে কুড়িগ্রাম-রংপুর ঘুরে ঢাকা যোগাযোগ এই অঞ্চলের মানুষের জন্য সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ। যোগাযোগব্যবস্থায় ভোগান্তি এই অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান বাধা ছিল। তবে উচ্ছ্বাসে ভাটা ফেলেছে চিলমারী প্রান্তে সেতুর সংযোগ সড়কের অসম্পন্ন ও ‘নিম্নমানের’ কাজ।

চিলমারী প্রান্তে কুড়িগ্রাম এলজিইডির নির্মাণাধীন ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সংযোগ সড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন চিলমারীর ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ। তাঁরা বলছেন, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সেতু উদ্বোধন হলেও শুধু সড়কের কারণে তাঁরা ব্যবহার বঞ্চিত থাকবেন। এ জন্য তাঁরা কুড়িগ্রাম এলজিইডি এবং স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলাকে দায়ী করছেন।

চিলমারীর একটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক গোলাম মাহবুব বলেন, ‘সেতুটি আমাদের দীর্ঘ আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন। উদ্বোধনের মূল উচ্ছ্বাসটা তাই আমাদের প্রান্তের মানুষের। কিন্তু সেই উচ্ছ্বাস থেকে আমাদের বঞ্চিত করা হলো। চিলমারী থেকে সেতুতে উঠতে দীর্ঘ যে সড়ক, সেটি এখনো অসম্পন্ন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সময় থাকতে সড়কের কাজ ফেলে রাখা হয়েছিল। সেতু উদ্বোধন হওয়ার পর এই সড়ক নির্মাণ ও মান নিয়ন্ত্রণে তেমন গুরুত্ব থাকবে কি না, তা নিয়েও সংশয় আছে।’

চিলমারী উপজেলা বণিক সমিতির সভাপতি মাহফুজার রহমান মঞ্জু বলেন, ‘এই সেতু আমাদের জন্য অপার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে। এই অঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এই সেতু আশীর্বাদ হয়ে উঠবে। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ যেতে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরত্ব কমবে। এতে করে সময় ও অর্থ দুটিই সাশ্রয় হবে। চরাঞ্চলে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য সহজেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো সহজ হবে।’

কুড়িগ্রাম এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউনুছ হোসেন বিশ্বাস বলেন, ‘প্রায় ২০ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মওলানা ভাসানী সেতুর কুড়িগ্রামের চিলমারী প্রান্তের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। কাজ চলমান। বৈরী আবহাওয়ার কারণে সড়কের কার্পেটিং করা সম্ভব হচ্ছে না। আবহাওয়া অনুকূলে আসার পর দুই সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।’

গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, ‘দেশে এলজিইডির সবচেয়ে বড় প্রকল্প এই তিস্তা সেতু। সেতুটি আগামীকাল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দুই জেলার মানুষদের নতুন নতুন কর্মসংস্থান বাড়বে। এতে করে এলাকার মানুষের জীবনমানের আরও উন্নয়ন হবে।’

সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯২৫ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর প্রকল্পটির দরপত্র আহ্বান করা হয়।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button