দক্ষতা বাড়াতে সুন্দর পিচাইয়ের ১০ পরামর্শ


ভারতের এক সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট ও গুগলের সিইও পদে পৌঁছেছেন সুন্দর পিচাই। তাঁর পথচলা নেতৃত্ব ও উৎপাদনশীলতার এক অনন্য উদাহরণ। তাঁর সাফল্যের কৌশলগুলোতে রয়েছে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া, সারা জীবন শেখার মনোভাব এবং কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখা। পিচাইয়ের পরামর্শের মধ্যে রয়েছে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সমস্যার সমাধান, সহানুভূতি এবং দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি। এগুলোই যেকোনো স্তরের পেশাজীবীদের জন্য উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও অর্থবহ প্রভাব তৈরিতে সহায়ক।
পিচাইয়ের অনুপ্রেরণামূলক যাত্রা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, সাফল্য শুধু প্রতিভার ওপর নির্ভর করে না। এটি নির্ভর করে স্থিতিস্থাপকতা, মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এবং সারা জীবন শেখার সাহসের ওপরও। তাঁর নেতৃত্বের ধরন গড়ে উঠেছে সহানুভূতি, স্পষ্ট যোগাযোগ এবং পরিবর্তন ও উদ্ভাবনকে গ্রহণ করার মানসিকতা থেকে। সাক্ষাৎকার ও বক্তৃতায় পাওয়া অভিজ্ঞতা বাস্তব নির্দেশনা দেয়। যে কেউ পেশাগত উন্নতি ও নেতৃত্বে এগোতে পারে। নিচে সুন্দর পিচাইয়ের নেতৃত্ব, উন্নয়ন এবং দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের জন্য সবচেয়ে কার্যকর ১০টি পরামর্শ তুলে ধরা হলো—
দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন ও এগিয়ে যান
যেকোনো সিদ্ধান্ত দ্রুত নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ, সময় বেশি নিলে অগ্রগতি থমকে যেতে পারে। সুন্দর পিচাই মনে করেন, অধিকাংশ সিদ্ধান্ত পরে বদলানো সম্ভব, তাই তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ এগিয়ে নেওয়া উচিত। ভুল থেকে শেখা নতুনত্বের জন্ম দেয় এবং পরীক্ষার সংস্কৃতিকে গড়ে তোলে। এতে কর্মপরিবেশ উদ্ভাবনী ও গতিশীল হয়।
জট খুলুন ও সমাধান দিন
নেতৃত্ব মানে শুধু কাজ ভাগ করা নয়; নেতৃত্বের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাধা দূর করা। যখন কোনো সমস্যা বা জটিলতা দেখা দেয়, তখন দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করতে হয়। এর ফলে প্রকল্প সময়মতো এগিয়ে যায় এবং দলের মাঝে বিশ্বাস ও আস্থা তৈরি হয়। ভালো নেতা সমস্যা সমাধানে সক্রিয় থাকেন।
শেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন
বর্তমান প্রযুক্তি খাতে সফল হতে শেখার ধারাবাহিকতা অপরিহার্য। নতুন দক্ষতা অর্জন, পরিবর্তিত সংস্কৃতি বোঝা এবং সফট স্কিল উন্নয়ন— সবকিছুই সৃজনশীলতা এবং মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ায়। সারা জীবন শেখার মানসিকতা আপনাকে আধুনিক বিশ্বের চাহিদার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে এবং নতুন সুযোগের দরজা খুলে দেয়।
কাজকে ভালোবাসুন
যে কাজটি করতে আনন্দ লাগে, সেটি দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। সুন্দর পিচাইয়ের প্রযুক্তি ও সমস্যা সমাধানের প্রতি গভীর ভালোবাসাই তাঁর সাফল্যের অন্যতম কারণ। কাজের প্রতি ভালোবাসা আত্মপ্রেরণা সৃষ্টি করে এবং কঠোর পরিশ্রমে চালিত রাখে।
জীবনের ভারসাম্য বজায় রাখুন
সুন্দর পিচাই অন্তত ছয় ঘণ্টার মানসম্মত ঘুমে গুরুত্ব দেন। নিয়মিত বিরতি নেওয়া, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো এবং কাজ থেকে কিছুটা দূরে থাকা আপনার শক্তি পুনরুদ্ধার করে। এভাবে জীবনের ভারসাম্য বজায় থাকে এবং কর্মক্ষমতা দীর্ঘমেয়াদি রূপে বৃদ্ধি পায়।
সহানুভূতি গড়ে তুলুন
অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি ও অনুভূতি বোঝা বিশ্বাস আনে। মনোযোগ দিয়ে শোনা সহযোগিতা বাড়ায় ও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে।
যোগাযোগে সরলতা আনুন
জটিল ভাবনা সহজভাবে উপস্থাপন করুন। স্পষ্ট ও সংক্ষিপ্ত বার্তা দলকে একসঙ্গে কাজ করতে সহায়তা করে।
কাজ নয়, প্রভাবকে গুরুত্ব দিন
ব্যস্ত থাকা মানেই উৎপাদনশীল হওয়া নয়। এমন কাজে মন দিন, যা কৌশলগত লক্ষ্য পূরণ করে এবং বড় প্রভাব ফেলে।
বিনয়ী থাকুন ও মতামত গ্রহণ করুন
সাফল্যের মাঝেও পিচাই সহজপ্রাপ্য থাকেন এবং সমালোচনাসহ সব মতামতকে উন্নতির সুযোগ হিসেবে নেন।
ধৈর্য ধরুন ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য রাখুন
বড় সাফল্য অর্জনে সময়ের দরকার হয়। ধৈর্য, স্থিরতা ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বড় প্রভাব সৃষ্টি করে এবং স্থায়ী উন্নয়ন নিশ্চিত করে।
ক্রাইম জোন ২৪