গাড়িচালক জনিকে থানায় পিটিয়ে হত্যার দায় পুলিশ এড়াতে পারে না: হাইকোর্ট


নিরপরাধ একজন যুবকের মূল্যবান জীবন ও অন্যদের নির্যাতন থেকে সুরক্ষায় পুলিশ বিভাগ নৈতিকভাবে দায় এড়াতে পারে না। যেখানে জনিসহ চারজনকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। পুলিশ বিভাগ বা সরকার ভুক্তভোগীর পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য এগিয়ে আসতে পারে। জনি হত্যা মামলায় আসামিদের করা আপিল নিষ্পত্তি করে রায়ে এসব পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ সোমবার বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের বেঞ্চ এমন পর্যবেক্ষণ দেন।
গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনিকে থানায় পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় পল্লবী থানার সাবেক এসআই জাহিদুর রহমান খানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে যাবজ্জীবন দণ্ডিত এএসআই রাশেদুল ইসলামের সাজা কমিয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের সোর্স রাসেলকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আসামি এএসআই কামরুজ্জামান আপিল না করায় তার বিষয়ে কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি। আইনজীবীরা জানিয়েছেন কামরুজ্জামানের যাবজ্জীবন সাজা বহাল রয়েছে। কামরুজ্জামান শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন। আর সোর্স সুমন কারাভোগ করে বেরিয়ে গেছেন।
রায়ে আদালত বলেন, নিরপরাধ লোকদের ধরা, আইনগত কারণ ছাড়া তাদের হাজতখানায় না রেখে আরেক জায়গায় নিয়ে নির্যাতন করা সবই বেআইনি। কাউকে গ্রেপ্তারের পর হাজতখানায় রাখতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি সাপেক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে। এ ক্ষেত্রে (জনির) পুলিশ বিভাগ কিছু করল না। মিথ্যা মামলা দায়ের করছে।
রায়ে আদালত আরও বলেন, ধারাবাহিক ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের কারণে জনির মৃত্যু হয়। পুলিশ কর্মকর্তা জাহিদুর রহমানের নেতৃত্বে বেআইনিভাবে জনি ও তাঁর ভাই রকিসহ অন্যদের আটক করা হয়। এভাবে আটক রেখে নির্যাতন করা সম্পূর্ণ বেআইনি। মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চালানো নিষ্ঠুর ওই ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো রিপোর্টও করেননি। পুলিশের করা মামলায় তাতে দুই পক্ষের মারামারির কারণে জনি আহত হয়ে মারা যান বলে উল্লেখ করা হয়, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটি অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা। যেখানে পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদারকি ও জবাবদিহি প্রক্রিয়া পুরোপুরি ভেঙে পড়েছিল।
ক্রাইম জোন ২৪