যুদ্ধ বন্ধের পর যেভাবে শাসিত হবে গাজা, ৫ মূলনীতি দিলেন নেতানিয়াহু


ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেল প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর গাজা দখলের পরিকল্পনা। একে ‘গাজায় যুদ্ধ থামানোর’ পরিকল্পনা বলতে চাচ্ছে দখলদার শক্তি। কাতারি সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতভর দীর্ঘ আলোচনার পর কীভাবে যুদ্ধ থামানো যায় সে বিষয়ে পাঁচটি মূলনীতিতে একমত হয়েছেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। এক বিবৃতিতে ওই পাঁচটি মূলনীতি প্রকাশ করেছে নেতানিয়াহুর কার্যালয়।
বিবৃতি অনুযায়ী, মূলনীতিগুলো হলো—হামাসকে নিরস্ত্র করা, জীবিত অথবা মৃত সব জিম্মিকে ইসরায়েলে ফিরিয়ে নেওয়া, গাজা উপত্যকার সামরিকীকরণ ঠেকানো, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ এবং হামাস অথবা প্যালেস্টাইন অথোরিটি বাদে অন্য একটি বিকল্প বেসামরিক প্রশাসন গঠন।
ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্তকে কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন না। তাদের মতে, এটি দীর্ঘদিনের ‘দখলদারির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ’। গত ২২ মাসেরও বেশি সময় ধরে বাস্তুচ্যুতি, ভয় এবং অবিরাম বোমা হামলার শিকার মানুষ এখন আরও গভীর সংকটের মুখে পড়তে চলেছে। ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ গাজা সিটিতে স্থল অভিযান বাড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে বর্তমানে লাখ লাখ মানুষ অস্থায়ী তাঁবু, আংশিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন, স্কুল, জাতিসংঘ পরিচালিত ক্লিনিক এবং আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছে।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পূর্বের যে স্থগিত যুদ্ধ চুক্তি হয়েছিল, তার পরে অনেকেই গাজার উত্তরে ফিরে এসেছিলেন। এখন তারা আবারও একই হুমকির মুখে। হামাস এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অজুহাতে ইসরায়েলি প্রশাসন আবারও অঞ্চলটির বাসিন্দাদের নিজেদের বাড়িঘর ও শহর থেকে উপত্যকার অন্য অংশে সরে যেতে বাধ্য করবে।
এদিকে, গাজা দখল কি আদৌ সম্ভব কিনা এ নিয়ে সন্দিহান বিশ্লেষকেরা। সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা গ্লেন কারল বলেন, ‘ইসরায়েলের সামরিক কর্মকর্তারা ধারণা করছেন হামাসকে পরাজিত করতে পাঁচ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে, গাজা দখল করা একটি অত্যন্ত কঠিন এবং প্রায় অসম্ভব কাজ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের সামরিক দখল অসংখ্য সমস্যা ডেকে আনবে। মানবিক, রাজনৈতিক, সামরিক ও নাগরিক সব ক্ষেত্রে। ফিলিস্তিনি তরুণেরা স্বাভাবিকভাবেই এতে অসন্তুষ্ট হবে। তারা সংগঠিত হোক বা না হোক, হামলা চালাতে পারে।’