শিরোনাম

চোখ দান করা হলো না সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের

চোখ দান করা হলো না সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের

মৃত্যুর আগে সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ নিজের চোখ দান করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। মৃত্যুর পর চোখ দান করার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ায় তাঁর চোখ নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) আনার পর চিকিৎসকেরা তাঁর মরদেহ পরীক্ষা করেন। মৃত্যুর পর একটি নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলে আর চোখ নেওয়া যায় না। তাঁর ক্ষেত্রে এই সময়টা পার হয়ে গেছে।

এদিকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে সেনানিবাসের শহীদ ক্যাপ্টেন জসিম হলে এই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

এরপর লাশ পরিবারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। পরিবারের সদস্যদের ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁর ময়নাতদন্ত করা হয়নি। রাতে হাটহাজারীর ধলই ইউনিয়নে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করার কথা রয়েছে।

পরিবারের সদস্যরা জানান, হারুন-অর-রশীদ বলেছিলেন, মৃত্যুর পর তাঁকে যেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা না হয়। তাঁকে যেন সাধারণ লোকের মতো দাফন করা হয়।

এ বিষয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আমরা কথা বলছি।’ তাঁদের মতামত সাপেক্ষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে কি না, তা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আজ বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্টহাউসের একটি কক্ষ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে। এরপর বেলা ৩টা ২০ মিনিটের দিকে তাঁর লাশ সেনাবাহিনীর একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম সিএমএইচে নেওয়া হয়।

এর আগে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেন সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ। এরপর ক্লাবের গেস্টহাউসের ৩০৮ নম্বর রুমে তিনি রাত্রি যাপন করেন। আজ চট্টগ্রাম আদালতে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ডেসটিনির একটি মামলায় তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা। তিনি ওই কোম্পানির প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

কিন্তু সকালে তাঁর মোবাইলে কল করে কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর কক্ষের দরজায় নক করে ডাকাডাকি করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না।

একপর্যায়ে কক্ষের বারান্দার গ্লাস ভেঙে বিছানায় তাঁর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা।

ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীন জানান, ডেসটিনির আর্থিক কেলেঙ্কারির একটি মামলায় চট্টগ্রাম আদালতে আজ তারিখ ধার্য ছিল। এ কারণে তাঁদের সঙ্গে তাঁর (হারুন-অর-রশীদ) আদালতে যাওয়ার কথা ছিল।

তবে সময় হয়ে যাওয়ার পরও তিনি আসছিলেন না। তাঁকে কয়েক দফায় ফোন করেও পাওয়া যাচ্ছিল না। তিনি আরও জানান, তিনি অত্যন্ত সৎ ও সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত মানুষ ছিলেন।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button