মালয়েশিয়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির প্রতিবাদে হাজার মানুষের বিক্ষোভ, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি


জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি ও প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের জোট সরকারের সংস্কারের অভাবে ক্ষুব্ধ মালয়েশিয়ার হাজার হাজার মানুষ প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে আনোয়ার ইব্রাহিমের ক্ষমতা গ্রহণের পর বিরোধী দলগুলোর আয়োজনে শনিবারের এই সমাবেশটিই এখন পর্যন্ত দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ।
বিক্ষোভকারীরা রাজধানী কুয়ালালামপুরের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে পরে ইনডিপেনডেন্ট স্কয়ারে মিলিত হয়। তাদের হাতে ছিল ‘আনোয়ার পদত্যাগ করুন’ লেখা প্ল্যাকার্ড। পুলিশ সদস্যরা সতর্কভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিল।
সেলানগর থেকে আগত ৩৫ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী ফাউজি মাহমুদ বলেন, ‘তিনি (আনোয়ার ইব্রাহিম) তিন বছর ধরে দেশ শাসন করছেন, কিন্তু তাঁর করা প্রতিশ্রুতি এখনো পূরণ করতে পারেননি।’ বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘আনোয়ার ইব্রাহিম বিদেশি বিনিয়োগ আনতে অনেক দেশে গেছেন, কিন্তু আমরা এখনো কিছু দেখিনি। জীবনযাত্রার ব্যয় এখনো অনেক বেশি।’
আল জাজিরার প্রতিনিধি রব ম্যাকব্রাইড কুয়ালালামপুর থেকে জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা ‘বিশ্বাস করে’ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার সময় যে সংস্কার এবং স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা তিনি পূরণ করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘কুয়ালালামপুরের রাস্তায় গত কয়েক বছরে আমরা যেসব বড় বিক্ষোভ দেখেছি, তার মধ্যে এটি অন্যতম।’
আনোয়ার ইব্রাহিম একটি সংস্কারবাদী স্লোগান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন এবং দেশের ভঙ্গুর রাজনৈতিক ব্যবস্থায় দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি মোকাবিলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে অনেকের দাবি, তিনি এসব প্রতিশ্রুতির কোনোটাও পূরণ করতে পারেননি।
সমাবেশের কয়েক দিন আগে, তিনি ভোটার টানতে বেশ কিছু জনমুখী পদক্ষেপের ঘোষণা দেন। এর মধ্যে ছিল সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের জন্য নগদ অর্থ সহায়তা এবং জ্বালানির দাম কমানোর প্রতিশ্রুতি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা এই ঘোষণাগুলোকে জন অসন্তোষ কমানো এবং শনিবারের বিক্ষোভে যোগদান থেকে মানুষকে বিরত রাখার একটি কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখেন। তবে, জুনে প্রকাশিত মেরডেকা সেন্টার ফর ওপিনিয়ন রিসার্চ কর্তৃক পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশটির বেশির ভাগ ভোটার আনোয়ার ইব্রাহিমের কাজের প্রতি সন্তুষ্ট।