মসজিদ নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষে আহত ব্যক্তি মারা গেছেন


পাবনার বেড়া উপজেলায় মসজিদের বারান্দা নির্মাণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত মো. হাদিস (৪০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত হাদিস সাঁথিয়া উপজেলার করমজা গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। তিনি বেড়া উপজেলার তারাপুর গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন।
দুপুরের দিকে তাঁর মৃত্যুর খবর উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের তারাপুর গ্রামে পৌঁছার পর ফের ভয়াবহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুপক্ষ। এই সংঘর্ষে অন্তত ১৫টি বাড়িতে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত হাদিস নতুন মসজিদের পক্ষের সমর্থক ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর উত্তেজিত লোকজন প্রতিপক্ষের (পুরোনো মসজিদের সমর্থকদের) বেশ কিছু বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন এবং কয়েকটি বাড়িতে ব্যাপক লুটপাট চালান। খবর পেয়ে বেড়া মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওলিউর রহমান বলেন, ‘গতকালের ঘটনায় আহত একজনের মৃত্যুর পর গ্রামে ফের সহিংসতা ছড়ায়। অন্তত ১৫টি বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। আমি নিজে ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে আছি। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় সেলিম নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি।’

এর আগে পুরোনো মসজিদে নামাজ-পরবর্তী মিলাদ মাহফিলে কিয়াম পড়া নিয়ে একটি ঝামেলা বাধে। মসজিদের তৎকালীন ক্যাশিয়ার মতিন কাজীসহ একটি পক্ষ কিয়াম পড়ার পক্ষে অবস্থান নিয়ে পুরাতন মসজিদ থেকে ১০০ গজের মধ্যে নতুন একটি মসজিদ নির্মাণ করেন।
সম্প্রতি নতুন মসজিদের বারান্দা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলে গ্রামে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। শুক্রবার সকালে বারান্দা নির্মাণের কাজ শুরু করলে অপর পক্ষ তাতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের লোকজন হাঁসুয়া, টেঁটা ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এই ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হয়। যাদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় পাঁচজনকে বগুড়া ও পাবনা পাঠানো হয়। আহতদের মধ্যে হাদিসকে মুমূর্ষু অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুরে তিনি মারা যান।