গোপনাঙ্গ দেখার ঘটনায় কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে মামলার অধিকার পেলেন অস্ট্রেলিয়ার নারীরা


২০২০ সালের অক্টোবর মাসে দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি নবজাতক কন্যাশিশুকে প্লাস্টিকে মোড়া অবস্থায় টয়লেটের একটি বিনে ফেলে রাখা অবস্থায় পাওয়া যায়। এই ঘটনার জের ধরে পরে কাতার কর্তৃপক্ষ একাধিক ফ্লাইটের অসংখ্য নারীকে জোর করে বিমান থেকে নামিয়ে শারীরিক অনুসন্ধানে বাধ্য করে। এই কর্মকাণ্ডে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছিল।
সেই সময় কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইট-৯০৮ থেকে জোর করে নামিয়ে আনা পাঁচ অস্ট্রেলীয় নারীও এই ধরনের অনুসন্ধানের শিকার হয়েছিলেন। এবার তাঁরা সরাসরি কাতার এয়ারওয়েজের বিরুদ্ধে মামলা করার অধিকার পেলেন।
শুক্রবার যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল কোর্ট আগের একটি রায় উল্টে দিয়ে নারীদের মামলা করার অধিকার নিশ্চিত করেছেন।
ভুক্তভোগী নারীদের আইনজীবী জানিয়েছেন, ঘটনার সময় তাঁদের মক্কেলদের গোপনাঙ্গে জোরপূর্বক পরীক্ষা চালানো হয়েছিল, যা সম্পূর্ণরূপে ইচ্ছার বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়েছিল এবং এটি ছিল অপমানজনক। ভুক্তভোগী এক নারী বলেন, ‘তিনি (দায়িত্বরত কর্মকর্তা) আমাকে প্যান্ট নামাতে বলেন এবং জানান, আমার যৌনাঙ্গ পরীক্ষা করতে হবে। আমি বাধা দিলে, তিনি শুধু বারবার বলছিলেন—দেখতে হবে, দেখতে হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঘটনাকে ‘অত্যন্ত বিব্রতকর, আপত্তিকর ও উদ্বেগজনক’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। প্রায় ১০টি ফ্লাইটের নারী যাত্রীরা এমন অনুসন্ধানের মুখোমুখি হয়েছিলেন বলে জানানো হয়।
প্রথমে এই মামলাটি খারিজ করে দিয়েছিলেন বিচারক জন হ্যালি। কারণ তিনি মনে করেছিলেন, এসব ঘটনা বিমান সংস্থার কর্মীদের দ্বারা ঘটেনি এবং এটি বিমানের বাইরের ঘটনা। কিন্তু আপিল কোর্টে তিন বিচারকের বেঞ্চ জানান, মামলাটি খারিজ করে দেওয়া যথাযথ ছিল না।
আদালত কাতার এয়ারওয়েজ এবং বিমানবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মাতার-কে মামলার খরচ বহনের নির্দেশ দিয়েছেন। সিভিল অ্যাভিয়েশন অথোরিটির বিরুদ্ধে মামলা এখনো খারিজই থাকছে, তবে মাতার-এর বিরুদ্ধে মামলা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন নারী যাত্রীরা।
নারীদের আইনজীবী ড্যামিয়ান স্টারজাকার বলেন, ‘আমাদের মক্কেলরা ওই রাতে দোহায় একটি ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছেন। তারা ন্যায়বিচার এবং ক্ষতিপূরণ পাওয়ার যোগ্য।’ আদালতের এই রায় তাঁদের সেই পথেই এগিয়ে দিয়েছে।