শিরোনাম

এশিয়া কাপের দল কতটা গোছাল বাংলাদেশ

এশিয়া কাপের দল কতটা গোছাল বাংলাদেশ

২০২৫ এশিয়া কাপের ভাগ্য নির্ধারণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক সভা কাল হয়ে গেল ঢাকায়। ভারতের বাংলাদেশ সফর পিছিয়ে যাওয়ায় সেপ্টেম্বরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হতে যাওয়া এশিয়া কাপের আগে সূচিতে বাংলাদেশের আর কোনো ম্যাচ নেই। বড় তারকাদের বিদায়ের পর পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তো এশিয়া কাপের আগে দল গুছিয়ে নেওয়ার কাজ কতটা সারতে পারল বাংলাদেশ?

প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিশ্চিত করা বাংলাদেশ কাল পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করার চেয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাকেই প্রাধান্য দিয়েছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। তাতে অবশ্য ভালো ফল আসেনি। ম্যাচটা বাজেভাবে হেরেছে। গত দুই মাসে বাংলাদেশ চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে। দুটি সিরিজ জয়, বাকি দুটিতে হার। গত মে মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে সিরিজ হারে বাংলাদেশ। সিরিজ হারে পাকিস্তানের কাছেও। তবে সবশেষ শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। এ বছর ১২ টি-টোয়েন্টি খেলে জিতেছে ৫টিতে।

এশিয়া কাপের আগে ওপেনিংয়ে মোটামুটি একটি সমন্বয় দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকারকে সরিয়ে এ বছর প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই সুযোগ দেওয়া হয়েছে পারভেজ হোসেন ইমনকে। ইমন আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। শারজায় আমিরাতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি দিয়ে নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন। ওপেনিংয়ে ইমনের সঙ্গী তানজিদ হাসান তামিমও ছিলেন উজ্জ্বল। সেঞ্চুরি না পেলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে অপরাজিত ৭৩ রানের ইনিংস খেলে সিরিজ জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন। তাঁদের ‘ইনটেন্ট’, শট খেলার ধরন বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে। তবে তৃতীয় ওপেনার হিসেবে সুযোগ পাওয়া নাঈম শেখ অবশ্য ব্যর্থ—তিন ম্যাচে তাঁর রান ৩২, ৩ ও ১০। ইমন-তানজিদে ওপেনিং সমন্বয় পেলেও বিকল্প ওপেনার নিয়ে চিন্তা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

মিডল অর্ডারে নিয়মিত ব্যাট করেছেন অধিনায়ক লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়, কখনো নাজমুল হোসেন শান্তও। শান্ত অবশ্য টি-টোয়েন্টি দল থেকে একরকম ছিটকেই গেছেন। হৃদয়ের কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছে। ২০২৪ সালে ২২ ইনিংসে তাঁর রান ছিল ৪৯৩, স্ট্রাইকরেট ছিল ১৩০। ২০২৫ সালে ১১ ইনিংসে হৃদয় রান করেছেন ২৪৬, স্ট্রাইকরেট ১১৪। স্ট্রাইকরেট ও ধারাবাহিকতায় লিটনও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। গত ১২ ইনিংসে তাঁর সংগ্রহ ২৭২ রান, স্ট্রাইকরেট ১২৬। ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে খেলা ৭৬ রানের ইনিংসটা তাঁর একমাত্র ভালো ইনিংস।

ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

যেখানে বেশি স্বস্তি, সেটা হলো ফিনিশিং বিভাগ। জাকের আলী ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী দারুণ ছন্দে রয়েছেন। ৬ ও ৭ নম্বরে নেমে ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দেওয়ার সামর্থ্য রেখেছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে জাকেরের ৫৫ রান (৪৮ বলে, ৫টি ছক্কা) বাংলাদেশকে জয় এনে দেয়। দুজনে মিলে শেষ দিকের চাপ সামলে দ্রুত রান তোলার সামর্থ্য দেখিয়েছেন।

পেস আক্রমণ নিয়ে আপাতত টিম ম্যানেজমেন্ট চিন্তামুক্ত থাকতে পারে। মোস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো হয়েছে। বিশেষ নজর ছিল তরুণ বোলারদের ওপর। সেখানে সবচেয়ে বড় স্বস্তির নাম শরীফুল ইসলামের পারফরম্যান্স। ৮ ইনিংসে ১২ উইকেট নিয়ে তিনি পাকিস্তান সিরিজে বাংলাদেশের সেরা বোলার। তানজিম সাকিবও খারাপ করেননি। মোস্তাফিজ, তাসকিন, শরীফুল, সাইফউদ্দিন আর তানজিমকে নিয়েই পেস আক্রমণ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের। বিশেষ নজর কেড়েছেন স্পিনার শেখ মেহেদী হাসান। কাল সাইফউদ্দিনের প্রত্যাবর্তনও চোখে পড়ার মতো।

ফিল্ডিংয়ে উন্নতির জন্য জেমস পেমেন্টকে নিয়োগ দিয়েছে বিসিবি। তবে ফিল্ডিংয়ে খুব বেশি নম্বর পাবে না বাংলাদেশ। পাকিস্তান সিরিজে ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। বিশেষ করে তাসকিন, মেহেদী ও নাসুমের মতো খেলোয়াড়ের হাত ফসকে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ পড়ে যাওয়ায় চাপ বেড়েছে দলের ওপর। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান, বিসিবির প্রধান নির্বাচক এরই মধ্যে জানিয়েছেন এশিয়া কাপের আগে দল আর খুব একটা নড়াচড়া করবেন না। তার মানে চোটাঘাত কিংবা বিশেষ কিছু না হলে এই পাকিস্তান সিরিজের স্কোয়াড নিয়েই এশিয়া কাপে যেতে পারে বাংলাদেশ। পরিবর্তন হলেও বড় জোর দু-এক জায়গায় হতে পারে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button