রাজশাহীতে যুবদল-ছাত্রদল নেতাসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা


রাজশাহীতে যুবদল ও ছাত্রদলের দুই নেতাসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে। এজাহারে ৩৬ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। আর ১৮ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
গত বুধবার দিবাগত রাতে নগরের বোয়ালিয়া থানায় মামলাটি হয়েছে। মামলার বাদীর নাম মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি ডেভেলপার ব্যবসায়ী। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম গ্রিন প্লাজা রিয়েল এস্টেট লিমিটেড। তিনি আসামিদের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছেন।
এজাহারে প্রধান আসামি করা হয়েছে রাজশাহী জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মোজাদ্দেদ জামানী সুমনকে (৪৮)। ২ নম্বর আসামি রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লিমন (২৬)। তাঁরা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলছেন। তবে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছেন, এমন কিছু ব্যক্তিকেও এ মামলায় আসামি করা হয়েছে। কয়েকজন ইতিমধ্যে গ্রেপ্তারও হয়েছেন।
মামলার এজাহারে দাবি করা হয়েছে, আসামিরা ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে আসছিলেন। অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা এমদাদুল হক লিমন বলেন, ‘মোস্তাফিজের কাছে ২৭ লাখ টাকা পাবেন আমিনুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি সুমন ভাইয়ের (যুবদল নেতা) আত্মীয়। টাকা না দেওয়ার কারণে আমরা থানায় বসেছিলাম। থানার ওসি নিজেই মীমাংসা করে দেন। কথা হয় যে, টাকা দিতে না পারলে মোস্তাফিজ একটা ফ্ল্যাট সুমন ভাইকে দিয়ে দেবেন। ওই পর্যন্তই জানি। এখন পরে ষড়যন্ত্র করে এই মামলা করেছে।’
তবে মোস্তাফিজুর রহমানকে চেনেন না, কোনো দিন কথাও হয়নি বলে প্রথমে দাবি করেন যুবদল নেতা সুমন। পরে ফ্ল্যাটের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি রাজনীতি করি ভাই। অনেকেই আসে। সে জন্য কথা বলতে হয়। তবে চাঁদা দাবির অভিযোগ সত্য নয়।’
ছাত্রদল নেতা লিমন ও যুবদল নেতা সুমন দাবি করেন, মোস্তাফিজুর রহমান স্বৈরাচারের দোসর। বেছে বেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আগামীকাল শনিবার তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করবেন। সেখানে এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলবেন।
মামলার বাদী মোস্তাফিজুর রহমান আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও তাঁর স্ত্রী শাহীন আক্তার রেণীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচয় দিতেন। তাঁদের সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে দিতেন। তাঁর বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগ আছে। কথা বলার জন্য মোস্তাফিজুর রহমানকে একাধিকবার তাঁর মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি তা ধরেননি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরের বোয়ালিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলা হওয়ার দিন আমি সাক্ষী দিতে বাইরে গিয়েছিলাম। এসে শুধু এজাহারটা দেখেছি। আজ (শুক্রবার) আবার পাঁচ দিনের প্রশিক্ষণে যাচ্ছি। আসার পর প্রাথমিক তদন্ত শুরু করব।’