শিরোনাম
নিবন্ধনের প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে গেল এনসিপিসহ ১৬টি দলরাজশাহী বিএনপির সম্মেলন, কমিটি না দিয়ে মঞ্চ ছাড়েন নেতারাসর্বোচ্চ জনশক্তি রপ্তানির আশা নিয়ে মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টাস্বাধীনতা দিবসের আগে কেন ‘জলদস্যু’ প্রতীকে ছেয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়াসহকারী কর কমিশনার ফাতেমা বরখাস্তসিলেটে আবাসিক হোটেলে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে নারীসহ আটক ৭চট্টগ্রাম বন্দরে রবির ফাইভ-জি প্রযুক্তি সেবা প্রদানে সমীক্ষা যাচাই করবে এক্সেনটেকদেখো, ওর থেকে আরও ৫ লাখ নিতে পারো কি না— মেসেঞ্জার কলে এনসিপি নেতা নিজাম‘শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলে সুস্থ হবে’ বলা কবিরাজকে ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তারকেন আলাস্কাতেই হবে ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক, দেন-দরবার কার পক্ষে যাবে

ভারত-যুক্তরাজ্য ঐতিহাসিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, ১১ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য বাড়বে

ভারত-যুক্তরাজ্য ঐতিহাসিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি, ১১ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য বাড়বে

ভারত ও যুক্তরাজ্য একটি যুগান্তকারী মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বার্ষিক ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি ২০২০ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ) থেকে বেরিয়ে আসার পর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে কোনো দেশের স্বাক্ষরিত সবচেয়ে বড় চুক্তি।

ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই চুক্তিটি ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং যুক্তরাজ্যের ব্যবসা ও বাণিজ্য বিষয়ক সেক্রেটারি অব স্টেট জোনাথন রেনল্ডসের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মধ্যে লন্ডনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পরেই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

যুক্তরাজ্যে দুই দিনের সফরে থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি চুক্তির পর স্টারমারকে পাশে রেখে একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে করেছেন। সেখানে তিনি জানান, এই চুক্তি ভারত ও যুক্তরাজ্যের সম্মিলিত সমৃদ্ধির জন্য একটি নীলনকশা। তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের সম্পর্কের একটি ঐতিহাসিক দিন। আমি আনন্দিত যে কয়েক বছরের কঠোর পরিশ্রমের পর, আজ আমাদের দুই দেশ একটি যুগান্তকারী অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই চুক্তির ফলে ভারতীয় টেক্সটাইল, পাদুকা, রত্ন ও গয়না, সামুদ্রিক খাবার এবং ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য যুক্তরাজ্যের বাজারে প্রবেশাধিকার পাবে। ভারতের কৃষি পণ্য এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য শিল্পের জন্যও যুক্তরাজ্যের বাজারে নতুন সুযোগ তৈরি হবে। এই চুক্তি বিশেষত ভারতীয় যুবক, কৃষক, জেলে এবং ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা খাতকে উপকৃত করবে।’

অন্যদিকে স্টারমার বলেন, এই চুক্তি ভারত ও যুক্তরাজ্যের জন্য ‘ব্যাপক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি’ নিয়ে আসবে। তিনি বলেন, ‘এটি এমন একটি চুক্তি যা আমাদের উভয় দেশের জন্য প্রয়োজন। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পাশাপাশি শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করবে ও জীবনযাত্রার মান বাড়াবে। এটি কর্মসংস্থানের জন্য ভালো, ব্যবসার জন্য ভালো, শুল্ক হ্রাস করবে এবং বাণিজ্যকে সস্তা, দ্রুত ও সহজ করবে।’

স্টারমার আরও বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পর এটি যুক্তরাজ্যের করা সবচেয়ে বড় এবং অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তি। এটি ভারতের করা সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তিগুলোরও মধ্যে একটি।’

তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে আমরা বিশ্বকে একটি শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছি— প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আরোপিত পারস্পরিক শুল্ক নিয়ে বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার মধ্যেও যুক্তরাজ্য ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত।’

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই চুক্তির অধীনে ৯৯ শতাংশ ভারতীয় পণ্য যুক্তরাজ্যের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে।

যুক্তরাজ্য ভারতের ষষ্ঠ বৃহত্তম বিনিয়োগকারী, যেখানে মোট বিনিয়োগ প্রায় ৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রায় ১ হাজার ভারতীয় প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্যে কাজ করে। ২০২৪-২৫ সালে যুক্তরাজ্যে ভারতের রপ্তানি ১২.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, আমদানি ২.৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৮.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। ২০২৩-২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২১.৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে ২০.৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি।

এই চুক্তিটি ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কোনো উন্নত দেশের সঙ্গে ভারতের প্রথম বড় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের জন্য ব্রেক্সিট থেকে বেরিয়ে আসার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য চুক্তিগুলোর মধ্যে একটি। যুক্তরাজ্য ২০১৬ সালে ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট দেয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২০ সালে এই জোট ত্যাগ করে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button