শিরোনাম

হেগের রায়ের পর ভারতকে পুনরায় সিন্ধু পানি চুক্তি চালুর আহ্বান পাকিস্তানের

হেগের রায়ের পর ভারতকে পুনরায় সিন্ধু পানি চুক্তি চালুর আহ্বান পাকিস্তানের

সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে হেগের স্থায়ী সালিসি আদালত (পিসিএ) একটি ‘সম্পূরক রায়’ দিয়েছে। পিসিএর রায় অনুযায়ী, সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে পাকিস্তানের মামলা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, এই রায় প্রমাণ করে সিন্ধু পানি চুক্তি এখনো কার্যকর রয়েছে এবং ভারত একতরফাভাবে এটি বন্ধ করতে পারে না। তারা ভারতকে সিন্ধু পানি চুক্তির কার্যক্রম পুনরায় চালু করার আহ্বান জানিয়েছে।

একটি সম্পূরক রায় হলো, প্রাথমিক সিদ্ধান্তের পর আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জারি করা অতিরিক্ত সিদ্ধান্ত। সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো অমীমাংসিত বিষয় সমাধানের জন্য বা কোনো চুক্তি বা চুক্তির বিচারিক এখতিয়ার, ক্ষমতা বা ব্যাখ্যা স্পষ্ট করার জন্য এটি জারি করা হয়।

গত এপ্রিল মাসে কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার জেরে ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে। নয়াদিল্লি এই হামলার ঘটনায় কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইসলামাবাদকে দায়ী করেছিল। পাকিস্তান তখন পানি ভাগাভাগি একতরফাভাবে স্থগিত করার যেকোনো প্রচেষ্টাকে ‘যুদ্ধের সমতুল্য’ বলে অভিহিত করে। এ ছাড়া আইন অনুযায়ী, সিন্ধু পানি চুক্তি একতরফা স্থগিতের কোনো এখতিয়ার ভারতের নেই বলেও জানায় পাকিস্তান। এরপর তারা ১৯৬৯ সালের ভিয়েনা কনভেনশন অন দ্য ল অব ট্রিটিজ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করে।

আজ সোমবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ‘২৭ জুনের সম্পূরক রায়ে আদালত বলেছে, পাকিস্তান-ভারত বিরোধের বিষয়ে কিষাণগঙ্গা ও রাটলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পসংক্রান্ত সালিসি প্রক্রিয়ার এখতিয়ার বহাল রয়েছে এবং আদালতের দায়িত্ব এই প্রক্রিয়াকে সময়মতো, কার্যকর ও ন্যায়সংগতভাবে এগিয়ে নেওয়া।’ পররাষ্ট্র দপ্তর আরও বলেছে, এই রায় পাকিস্তানের অবস্থানকেই সমর্থন করে। সিন্ধু পানি চুক্তি বৈধ এবং এটি এখনো কার্যকর রয়েছে। এই চুক্তি নিয়ে ভারতের একতরফা পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো অধিকার নেই।

পাকিস্তান ভারতকে ‘অবিলম্বে সিন্ধু পানি চুক্তি পুনরায় চালু করতে এবং সম্পূর্ণরূপে ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে তার চুক্তিগত বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে’ আহ্বান জানিয়েছে। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পিসিএর এই সম্পূরক রায়কে ‘প্রত্যাখ্যান’ করেছে।

ভারতীয় সংবাদপত্র দ্য হিন্দু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ভারত এই তথাকথিত আদালতকে কখনো স্বীকৃতি দেয়নি এবং এর দ্বারা গৃহীত যেকোনো সিদ্ধান্তকে অবৈধ মনে করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, পেহেলগাম হামলার পর ভারত ‘আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে একটি সার্বভৌম জাতি হিসেবে তার অধিকার’ প্রয়োগ করেছে। সীমান্তে সন্ত্রাসবাদের প্রতি ‘পাকিস্তানের সমর্থন’ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত থাকবে। মন্ত্রণালয় হেগের সালিসি আদালতের সাম্প্রতিক ঘোষণাকে ‘পাকিস্তানের ইন্ধনে একটি প্রহসন’ বলেও আখ্যায়িত করেছে।

এদিকে পিসিএ এক বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলেছে, আদালত দেখতে পেয়েছে, ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করতে পারে না। কারণ, চুক্তির শর্তাবলিতে এমন কোনো বিধান নেই। এটি কেবল ভারত ও পাকিস্তানের পারস্পরিক সম্মতিতেই বাতিল করা যেতে পারে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button