গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির ‘সম্ভাবনা উজ্জ্বল’, নেতানিয়াহুকে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন ট্রাম্প


যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গাজা উপত্যকায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তিতে রাজি করানোর চেষ্টা করছেন। ইরান ও ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধের পর যে সাময়িক শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেটির পরিপ্রেক্ষিতেই ট্রাম্প এই উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এই বিষয়ে অবগত একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউজউইককে জানিয়েছে, ‘চুক্তি হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে। ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের বিষয়টা মিটে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট এখন ইসরায়েলিদের বোঝানোর জন্য অনেক পরিশ্রম করছেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ট্রাম্প শুধু ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে চান না। তিনি চাইছেন, এই সাময়িক যুদ্ধবিরতি যেন স্থায়ী সমাধানের দিকে এগিয়ে যায়। সূত্রটি বলেছে, ‘প্রেসিডেন্টের লক্ষ্য শুধু ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধ থামানো নয়। তিনি চান, এই সময়ের মধ্যে যেন সব জিম্মি মুক্তি পায় এবং একটা স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হয়, যা ভবিষ্যতে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনার পথ খুলে দিতে পারে।’
নিউজউইক এ বিষয়ে হামাস, ইসরায়েল সরকার এবং হোয়াইট হাউসের মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করেছে। তবে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পায়নি।
এদিকে, ট্রাম্প বলেছেন, গাজায় শিগগিরই যুদ্ধবিরতি হতে পারে। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা মনে করছি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে প্রায়ই এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। আমি মনে করি, এটা খুব কাছাকাছি। আমি এ বিষয়ে জড়িত কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। পরিস্থিতিটা খুবই ভয়াবহ।’
ট্রাম্প গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের মানবিক সহায়তার ব্যাপকতার দিকটিও তুলে ধরেন। ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গাজা মানবিক সহায়তা ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ওই অঞ্চলের বেশির ভাগ সহায়তার ব্যবস্থা করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা ওই এলাকায় বিপুল পরিমাণ অর্থ ও খাদ্য পাঠাচ্ছি। আমাদের পাঠাতেই হচ্ছে। তাত্ত্বিকভাবে আমরা সরাসরি জড়িত নই, কিন্তু বাস্তবে আমরা জড়িত। মানুষ মারা যাচ্ছে। আমি ওই মানুষগুলোর দিকে তাকাই, যাদের কাছে খাবার নেই, কিছুই নেই। আমরাই সেখানে সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছি।’
মানবিক সহায়তা চুরি হওয়ার বিষয়ে ট্রাম্প জানান, এখন সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা আরও উন্নত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘কিছু সহায়তা খারাপ মানুষেরা নিয়ে যাচ্ছে, বিক্রি করছে। তবে এখন আমাদের একটি ভালো ব্যবস্থা আছে। আপনি দেখুন, মানুষ একবেলার খাবারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দেয়। এটা খুবই দুঃখজনক। অন্যান্য দেশ সাহায্য করছে না। কেউই এগিয়ে আসছে না। আমরাই মানবিক কারণে এগিয়ে এসেছি।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা গাজার বিষয়ে কাজ করছি। চেষ্টা করছি বিষয়টা সামাল দেওয়ার। প্রচুর খাবার পাঠানো হয়েছে সেখানে। বিশ্বের অন্যান্য দেশকেও এগিয়ে আসা উচিত।’
ইরানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তেহরান এখন আলোচনায় আগ্রহী এবং তারা পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্প নিয়ে এগোবে না। ট্রাম্প বলেন, ‘তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়। পারমাণবিক প্রকল্প তাদের মূল চিন্তা নয়। তারা হয়তো বলছে, আমার সঙ্গে দেখা করবে না। কিন্তু আপনারা কি মনে করেন, তারা সত্যিই দেখা করতে চায় না? তারা কিন্তু বোকা নয়।’