গাভাস্কারের অনুরোধে সাড়া দিলেন না পন্ত


আঙুলের ইশারায় সুনীল গাভাস্কার বোঝাচ্ছিলেন ‘ডিগবাজি দাও’। কারণ প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর এভাবেই উদ্যাপন করেন ঋষভ পন্ত। গাভাস্কারও বেশ উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন তখন। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও এল উদ্যাপনের সুযোগ। কিন্তু গাভাস্কারের অনুরোধ রাখেননি পন্ত। ডান হাতের আঙুল উল্টো ঘুরিয়ে চোখের কাছে এনে চশমার মতো উদ্যাপন করেন তিনি।
হেডিংলি টেস্টে পন্তের উদ্যাপন বলে দেয় নিয়ন্ত্রণ এখন ভারতের হাতে। দ্বিতীয় ইনিংসেও দারুণ ছন্দ ধরে রেখে বড় লিডের পথে ছুটছে সফরকারীরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৬ উইকেটে ৩৪৯ রান তুলেছে তারা। লিড দাঁড়াল ৩৫৫।
এর আগে দেড় বছরের সেঞ্চুরির অপেক্ষা ফুরোল লোকেশ রাহুলের। সবশেষ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শতক করেছিলেন। রাহুল খেলছিলেন কিছুটা ধীরে-সুস্থে, তাঁর পরে নেমে ঋষভ পন্তও ছুঁয়েছেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার। নাম লিখিয়েছেন বিরল রেকর্ডের তালিকায়।
স্পিনার শোয়েব বাশিরের বল অফ সাইডে ঠেলেই দৌড় দিলেন পন্ত। রান পূর্ণ হতেই শুরু করলেন কাঙ্ক্ষিত সেঞ্চুরি ছোঁয়ার উদযাপন। ম্যাচের প্রথম ইনিংসেও শতকের স্বাদ পাওয়া ভারতীয় উইকেটরক্ষক-ব্যাটার নিজেকে তুলে নিলেন টেস্ট ইতিহাসের এমন এক পাতায়, যেখানে তিনি ছাড়া আছেন আর কেবল একজন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হেডিংলি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪০ বলে ১৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১১৮ রান করেন পন্ত। প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ১৩৪ রান।
টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে এক ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি করা দ্বিতীয় উইকেটরক্ষক-ব্যাটার পন্ত। প্রথমজন জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার। ২০০১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারারেতে প্রথম ইনিংসে ১৪২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ১৯৯ রান করেছিলেন। ভারতের সপ্তম ক্রিকেটার হিসেবে এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন পন্ত।
মেলবোর্নে গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৩৭ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে পন্ত তোপের মুখে পড়েন। তাঁর আউটের ধরন দেখে রীতিমত ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন গাভাস্কার। ধারাভাষ্যকক্ষে মাইক হাতে তিরস্কার করতে থাকেন ‘স্টুপিড, স্টুপিড, স্টুপিড’ বলে। কিন্তু ৬ মাসের ব্যবধানে বদলে গেছে গাভাস্কারের সুর। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর বলে ওঠেন—‘সুপার্ব, সুপার্ব, সুপার্ব’।