৫০ হাজার মার্কিন সেনাকে হত্যার হুমকি ইরানের গণমাধ্যমে


ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাতের মধ্যে ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে বড় ধরনের বোমা হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘটনায় প্রতিশোধ নিতে চায় ইরান। দেশটির ইরানের সর্বোচ্চ নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছে। সর্বশেষ ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমেও যুক্তরাষ্ট্রকে ভয়ংকর প্রতিশোধের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে আজ সোমবার ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ইরানে হামলার পর সর্বশেষ দেশটির শাসনক্ষমতার পরিবর্তন ঘটানোর হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর এই মন্তব্যের জবাবে ৫০ হাজার মার্কিন সেনার কফিন ওয়াশিংটনে পাঠানোর হুমকি দিয়েছে ইরান।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের উপস্থাপক মেহেদি খানালিজাদেহ এক ঘোষণায় বলেন, ‘আপনারা আমাদের রক্ত ঝরিয়েছেন, এখন আপনাদের ৫০ হাজার সেনার কফিন গ্রহণ করবেন।’ তিনি সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দোষারোপ করে বলেন, ‘হোয়াইট হাউসে বসেই আপনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—মার্কিন সেনাদের কফিনের বহর যেন ওয়াশিংটনে ফেরত যায়।’
খানালিজাদেহর হুঁশিয়ারিটি এমন সময়ে এসেছে যখন ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে কঠোর ‘প্রতিশোধের জন্য প্রস্তুত’ থাকতে বলেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ইরান মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।
এদিকে আল-জাজিরা সহ একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, আজ সোমবার ইসরায়েল আবারও নতুন করে ইরানের ফোরডো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। ওই পারমাণবিক গবেষণাগারের একটি প্রবেশপথ লক্ষ্য করে ওই হামলাটি চালানো হয়।
এ ছাড়া ইরানের রাজধানী তেহরানেও বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শহরের আকাশে ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলী দেখা গেছে। এই হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল ইরানের বিপ্লবী গার্ডের একটি সামরিক সদর দপ্তর। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলো দাবি করছে, হামলার সময় সেখানে শত শত অভিজাত সেনা এবং গোয়েন্দা কর্মকর্তা অবস্থান করছিলেন। এই হামলায় বিপুল প্রাণহানি হয়েছে।
এ অবস্থায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কাও জোরালো হচ্ছে। একই সঙ্গে আশঙ্কা করা হচ্ছে, পুরো মধ্যপ্রাচ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে। আন্তর্জাতিক কূটনীতিকেরা অবিলম্বে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য আহ্বান জানালেও, ইসরায়েল, ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র—তিন পক্ষই এখন একপ্রকার যুদ্ধাবস্থায় অবস্থান করছে।
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, যদি এই উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ না করা যায়, তাহলে বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন ও ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।