শিরোনাম

ঈদে এটিএম বুথে ভোগান্তি: সীমিত সক্ষমতাই সংকটের কারণ

ঈদে এটিএম বুথে ভোগান্তি: সীমিত সক্ষমতাই সংকটের কারণ

ঈদুল আজহার ছুটিতে নগদ টাকার সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ গ্রাহকেরা। ব্যাংকিং লেনদেন বন্ধ থাকায় এটিএম বুথ, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে মানুষ। কিন্তু অধিকাংশ এটিএম বুথ ছিল টাকাশূন্য, বন্ধ কিংবা সীমিত লেনদেন সক্ষমতায় চলমান। ফলে ঈদের সময় বাজার-সদাই থেকে শুরু করে কোরবানির গরু কেনাসহ প্রয়োজনীয় কাজে হোঁচট খেতে হয়েছে বহু মানুষকে।

বাংলাদেশ ব্যাংক ঈদের আগে এক সার্কুলারে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছিল, যেন ছুটির সময় প্রতিটি এটিএম বুথে পর্যাপ্ত নগদ টাকা রাখা হয় এবং রিফিল ব্যবস্থা চালু থাকে। কিন্তু বাস্তবে অধিকাংশ ব্যাংক তা মানতে পারেনি।

এ বিষয়ে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি এটিএম বুথে সর্বোচ্চ ৮০ লাখ টাকা পর্যন্ত রাখা যায়। ঈদের সময়ে এই পরিমাণ টাকা দ্রুতই ফুরিয়ে যায়। আইনগত সীমাবদ্ধতা ও নিরাপত্তাঝুঁকির কারণে অতিরিক্ত টাকা রাখা সম্ভব নয়। ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী বুথে নির্ধারিত পরিমাণের বেশি টাকা রাখা যায় না। বেশি রাখলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরীক্ষায় তা অনিয়ম হিসেবে ধরা পড়বে। প্রয়োজনীয় বিধিমালা পরিবর্তন ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়। ফলে গ্রাহকদের ভোগান্তি প্রায় অনিবার্য হয়ে ওঠে।

গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বহু এটিএম বুথ ছিল বন্ধ কিংবা টাকার সংকটে অচল। অনেক বুথে ঝুলে রয়েছে ‘টাকা নেই, দুঃখিত’ লেখা নোটিশ। কিছু বুথে আবার সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকার বেশি উত্তোলন সম্ভব নয়। কোথাও কোথাও বুথের নিরাপত্তাকর্মীর দেখা মেলেনি।

রাজধানীর মগবাজারের বাসিন্দা মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর থেকে পাঁচটি বুথ ঘুরে এক টাকাও তুলতে পারিনি। প্রতিটি বুথে “টাকা নেই” লেখা নোটিশ ঝুলছিল। অথচ নগদ টাকার খুব দরকার ছিল।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১২ হাজার ৯৪৬ এটিএম বুথ ও ৭ হাজার ১২টি ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) রয়েছে। কিন্তু ঈদ কিংবা উৎসবকেন্দ্রিক অতিরিক্ত চাহিদা মেটাতে এসব বুথের প্রযুক্তিগত ও নিরাপত্তার সীমাবদ্ধতা বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘ঈদের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্যাংকগুলোকে এটিএম বুথে স্বয়ংক্রিয় রিফিল ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং বুথগুলোর তদারকি জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে প্রযুক্তিগত সমস্যার দ্রুত সমাধান ও নগদ টাকার বিকল্প ডিজিটাল লেনদেনে মানুষকে উৎসাহিত করাও জরুরি।’



আরও দেখান
Back to top button