শেখ হাসিনার শত্রু ছিলাম, তাঁকে বের করেছি, তাঁর ভাগনির চাকরি খেয়েছি: ববি হাজ্জাজ


অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পতন ও ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিকের মন্ত্রিত্ব হারানোর পেছনে ভূমিকা রাখায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে হত্যার চেষ্টা করছেন বলে তিনি মনে করেন। গতকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলেন।
এর আগে সকালে গুলশানে হাজ্জাজের বাসভবন থেকে মো. নূর (২৫) নামে একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে তাঁর দেহরক্ষীরা। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি মোস্তফা আল নাফিসের নির্দেশে তিনি হামলার পরিকল্পনা নিয়ে ববি হাজ্জাজের বাসভবনে প্রবেশ করেন বলে এনডিএমের অভিযোগ।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে এনডিএম মহাসচিব মোমিনুল আমিন বলেন, সন্দেহজনক আচরণের করেণ দেহরক্ষীদের কাছে ধরা পড়ে নূর। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নূর স্বীকার করে, ‘শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশেই তাকে এ কাজে পাঠানো হয়েছে’। হাজ্জাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ এবং প্রাথমিক সাক্ষাতের ছলে বাসায় প্রবেশ করাই ছিল তার মূল উদ্দেশ্য।
সংবাদ সম্মেলনে ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘আমিসহ যুগপৎ আন্দোলনের নেতৃত্ব যারা দিয়েছিলেন, তাঁদের সকলের উপরে হত্যাচেষ্টা হতে পারে। আমার উপরে হয়তো শেখ হাসিনার বা তার দোসরদের রাগ আরো বেশি হতে পারে। কারণ ইউ নো লন্ডনের মাটিতেও তাঁর ভাগনির চাকরি আমি খেয়ে দিয়েছি। তাদের বিরুদ্ধে হয়তো অনেক জায়গায় অনেক ধরনের মামলা বা অনেক কিছু আমি সবচেয়ে প্রথম করেছি অন্য সবার আগ থেকে। আর অবভিয়াসলি ‘ইউ নো’ একদম সামনের দিকে ভূমিকা তো আমরা প্রথম থেকে রেখে যাচ্ছি। আমরা সবসময় তাঁদের বিরুদ্ধে ছিলাম। তারা যখন সরকারি ক্ষমতায় ছিল তখন আমরা তাদের রোষানলে ছিলাম।’
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় আনতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজকে এই ছাত্রলীগের কোন নেতা আমি নামও জানিনা, মোস্তফা আল নাফিস। এদেরকে কেন আইনের আয়তায় আনা হচ্ছে না? আমরা বারবার দেখছি, একদিন ধানমন্ডিতে, একদিন বনানীতে একদিন মিরপুরে ছাত্রলীগ মিছিল করছে। এরা নিষিদ্ধ একটা সংগঠন, তাঁরা কীভাবে মিছিল করে? এটার ভিডিও ফুটেজ আছে, এই ভিডিও ফুটেজে ধরে কয়জনকে অ্যারেস্ট করা হচ্ছে, এগুলো তাড়াতাড়ি জনসম্মুখে আনতে হবে।’
ববি হাজ্জাজ আরো বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত এই ফ্যাসিবাদের দোসরদেরকে আইনি প্রক্রিয়ায় না আনা যাবে, তাঁদের আইনের আওতায় না আনা যাবে ততদিন পর্যন্ত আমরা যারা এই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি, তাঁরা যেমন সুরক্ষিত না তেমনি দেশের জনগণও সুরক্ষিত না এবং সামনের নির্বাচনও আমরা সুন্দরভাবে করার জায়গায় আসব না। নির্বাচন সঠিকভাবে হবে, সঠিক সময় হবে, কিন্তু তার জন্য এই প্রচেষ্টাগুলা এখন জোরদারভাবে শুরু করতে হবে।’
পরিস্থিতির গুরুতর মাত্রা বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সোজা না ভাই, আজকে নুরুল হক নূর হাসপাতালে.. আজকে আমার দেহরক্ষীগণ যদি সিকিওর করতে না পারতো, আমি যখন বের হতাম আমার গাড়ির উপরে যদি দুইটা ককটেল পড়তো বা অন্য কিছু হামলা হতো, আজকে যদি আমি আহত হতাম, আরো ১০ জন আহত হতো। তাহলে নির্বাচন কীভাবে আমরা করব কীভাবে, সামনে কীভাবে আগাব?’
এই বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছ থেকে সুস্পষ্ট ‘রোডম্যাপ’ দাবি করে এনডিএম সভাপতি বলেন, ‘এটা জানতে হবে ভাই, সুরক্ষিত আমাদের হতে হবে, জনগণকে সুরক্ষিত হতে হবে। জনগণকে সুরক্ষা দেয়ার প্রথম ধাপ হলো, আওয়ামী দোসরদের আইনি প্রক্রিয়ার ভেতরে আনা। এরা বাইরে এইভাবে ঘুরতে পারে না।’
ক্রাইম জোন ২৪